রক্তচাপ ১২০/৮০–র নীচে নামা মানেই লো-প্রেশার। কিন্তু ‘জয়েন্ট ন্যাশনাল কমিটি ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অব ব্লাড প্রেশার’-এর মতে রক্তচাপ ১২০/৮০–র নীচে থাকলে তা মোটেই লো–প্রেশার নয়, বরং খুব ভাল ব্যাপার৷ কারণ এ রকম রক্তচাপে হৃদযন্ত্র, বৃক্ক, মস্তিষ্ক, সব সুরক্ষিত থাকে৷ এমনকি ৯০/৬০ প্রেশার থাকা সত্ত্বেও যদি কোনও সমস্যার উদ্রেক না হয়, তার জন্য এই রক্তচাপ স্বাভাবিক৷ প্রেশার ৯০/৬০–এরও নীচে নেমে গেলে তখনই একমাত্র তাকে লো–প্রেশার বলে৷ কিছু মানুষের এমনিই রক্তচাপ একটু কমের দিকে থাকে৷ তা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে বরং খুশি হওয়া উচিত৷ কারণ তাঁদের শরীর, বিশেষত হৃদযন্ত্র, বৃক্ক, মস্তিষ্ক সব সুরক্ষিত থাকে। তবে লো প্রেসারের কিছু সমস্যাও আছে।
লো–প্রেশারের ক্ষতি
বয়সের সঙ্গে প্রেশার বাড়া–কমার একটা নিজস্ব নিয়ম থাকে৷ যেমন, মানুষ যতদিন বাঁচেন সিস্টোলিক প্রেশার বা উপরের রক্তচাপ বাড়তে থাকে৷ ডায়াস্টোলিক প্রেশার বা নীচের রক্তচাপ আবার ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত বাড়ে৷ তার পর ৬০–৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত এক জায়গায় স্থির থাকে৷ তার পর কমতে শুরু করে৷ কমতে কমতে যাতে ৬৫–র নীচে না নেমে যায়, সে দিকে খেয়াল রাখা দরকার। প্রেশার হঠাৎ অনেকটা কমে গেলে বা ক্রমাগত কমে যেতে থাকলে তাকে হালকা ভাবে নেবেন না৷ কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা কিন্তু গুরুতর অসুখের পূর্বাভাস৷ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে প্রাণ চলে যেতে পারে৷
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়
• লো–প্রেশারের সঙ্গে আবার অপুষ্টি এসে যুক্ত হলে সমস্যা বাড়তে পারে৷ কাজেই সুষম খাবার খেয়ে শরীরের পুষ্টি বজায় রাখুন৷
• অতিরিক্ত মাছ–মাংস–ডিম–দুধ খাওয়ার দরকার নেই৷ স্বাভাবিক ঘরোয়া খাবার পেট ভরে খেলেই হবে৷ ওজন ঠিক থাকলে এক–আধটু হাই ক্যালোরি খাবার খেতে পারেন৷
• কম রক্তচাপের মানুষের যদি লুজ মোশন, বমি, বা অতিরিক্ত ঘাম হয়ে প্রেশার আরও কমে যায়, বিপদের আশঙ্কা আছে৷ এ রকম হতে পারে বলে মনে হলে আগে থেকে ওআরএস মজুত রাখুন৷ সমস্যার শুরু হলে পত্রপাঠ ওআরএস বা নুন–চিনির শরবত খেয়ে শরীরে নুন–জলের ভারসাম্য বজায় রাখুন৷
• প্রেশার কম থাকলে জিম শুরু করার আগে বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন৷ কতটুকু ধকল আপনি নিতে পারবেন তা জেনে নেওয়া দরকার৷ শুরুতে প্রচুর ব্যায়াম করবেন না৷ শরীরকে আস্তে আস্তে সইয়ে নিন৷ প্রচুর ঘাম হলে মাঝেমাঝে ওআরএস খান৷ মাথা ঘুরতে শুরু করলে বিশ্রাম নিন৷
• পশ্চুরাল হাইপোটেনশনের ধাত থাকলে শোওয়া–বসা থেকে ওঠার সময় তাড়াহুড়ো করলে বিপদ৷ কাজেই ধীরেসুস্থে উঠুন৷ লুজ মোশন বা বমি হলে, কিংবা গরমে ঘেমে–নেয়ে গেলে আরও সাবধান হতে হবে৷
• প্রচুর ঘাম হয়ে মাথা ঘুরতে শুরু করলে নুন, নোনতা খাবার, শরবত বা ডাবের জল, যা পাবেন হাতের কাছে, খেয়ে নিন৷