ভোটের মুখে ‘রাম’নাম গাইতেই শোনা গেছিল তাদের। এমনকি গোটা ভোটেই বিজেপির সঙ্গে ‘সমঝোতা এক্সপ্রেসে’ সওয়ার হতে দেখা গিয়েছে বামেদের। কিন্তু ভোট মিটতে যে বুথ ফেরত সমীক্ষা তারা করেছেন, তাতে উঠে এসেছে দিদিমনির ওপরই আস্থা রেখেছে বাংলার মানুষ! হ্যাঁ, বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম যখন বাংলা থেকে বিজেপি’র আসন সংখ্যা বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছে, তখন সিপিএমের এগজিট পোল বলছে, বিজেপি নয়, বাংলা থেকে সর্বাধিক আসন পাবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূলই। অর্থাৎ আলিমুদ্দিনের কর্তারা একপ্রকার মেনেই নিলেন বাংলা ও বাংলার মানুষের একমাত্র ভরসা মমতাই।
এর পাশাপাশি, বাইরে চলে আসা দলের ওই সমীক্ষা রিপোর্ট থেকে এ-ও জানা গেছে যে, নিজেদের ওপরও ভরসা রাখছেন না সিপিএম নেতারা। ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার আগেই নিজেদের যেন আত্মসমর্পণ করাল সিপিএম। সেই জন্যই আগামী ৪ জুন রাজ্য কমিটির বৈঠক ডেকেছে সিপিএম নেতৃত্ব। আর কী তথ্য উঠে এলো সিপিএমের সমীক্ষায়? দলীয় সূত্রে খবর, বাংলার ৪২টি আসনের মধ্যে ৩২টি আসন দেওয়া হয়েছে তৃণমূলকে। যেখানে বিজেপি’র বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সবাই রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে, সেখানে বিজেপি’র ঝুলিতে দেওয়া হয়েছে ৫টি আসন।
ফলে যেসব সংবাদমাধ্যম বিজেপিকে বাংলা থেকে ১২টি বা ১৬টি আসন দিয়েছে তা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন আলিমুদ্দিনের কর্তারা। এবার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে ওঠেনি সিপিএমের। তারপরও কংগ্রেসকে বাংলা থেকে ২টি আসন দিয়েছে তারা। সব শেষে নিজেদের জন্য রেখেছে ৩টি আসন। তবে সূত্রের খবর, যদিও কোন কোন আসন নিজেরা পাবে এবং কংগ্রেস-বিজেপি পাবে তার উল্লেখ নেই সমীক্ষা রিপোর্টে।
আরও দুটি তথ্য উঠে আসছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দলের মুখপত্রে বলেছিলেন, ‘তৃণমূলের ফুটন্ত কড়াই থেকে বিজেপি’র জ্বলন্ত উনুনে ঝাঁপ দেওয়াটা কি উচিত হবে? আমরা একবার ভাবব না!’ কিন্তু দেখা গেছে, সিপিএমের বেশিরভাগ কর্মী-সমর্থকরা তলায় তলায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। আর দলের সংগঠন তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছে বলেই বিজেপি’র আসন সংখ্যা বাড়বে। যা পাওয়ার কথা ছিল সিপিএমের।