বৃহস্পতিবার গলসি-২ ব্লকের খানা জংশন এলাকায় নির্বাচনী সভা করলেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। অন্যান্য সভার মত এই সভাতেও মোদীর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তিনি। দেশের মানুষকে যেভাবে ঠকিয়েছেন মোদী, তাতে যে তিনি আর ক্ষমতায় ফিরবেন না , সেই কথাও আবার তিনি স্পষ্ট করে দেন। দেশে যে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সরকার গড়তে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পারেন তাও জানান অনুব্রত।
সভায় নরেন্দ্র মোদীকে ঝাড়া মিথ্যেবাদী, বেইমান এবং দেশের সর্বনাশকারী প্রধানমন্ত্রী বলে আক্রমণ শানালেন অনুব্রত। তিনি জানালেন, “মোদী মিথ্যেবাদী, জালিয়াতি। কোনও মানুষ ভুল করে একটা ভোটও বিজেপিকে দেবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সত্যের পথিক। কোনও মিথ্যা কথা বলেন না। তাঁর কোনও অহঙ্কার নেই। পরনে ৬০০ টাকা দামের তাঁতের শাড়ি। পায়ে হাওয়াই চপ্পল। মাথার উপর টালির চাল। অন্যদিকে মোদী প্রথমে বলেছিলেন, তিনি চাওয়ালা। আমরা খোঁজ নিয়ে জানলাম, জীবনে কোনওদিন চা বিক্রি করেননি। মিথ্যেবাদী প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী মানুষের উপকার করেন না। চাষি, খেটেখাওয়া, আদিবাসী সহ কোনও শ্রেণীর মানুষের উপকার করেননি”।
দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আধা সামরিক বাহিনী চোখ দেখালে চোখের পর্দা নামিয়ে দেবেন। আমরা আছি। বিষ্ণুপুরে ভোটের আগের দিন থাকব, ভোটের দিনও থাকব। কোনও চিন্তা করবেন না। ভোট শেষ না হওয়া অবধি থাকব”। মোদী সরকারের ব্যর্থতাকে তোপ দেগে তিনি বলেন, “মোদী সরকার দেশে অন্ধকার নামিয়ে এনেছেন। মা-মাটি-মানুষের সরকার আপনাদের পাশে আছে এবং পাশে থাকবে। কোনওরকম ভয় পাবেন না। ভোটের দিন আধা সামরিক বাহিনী বুথে ঢুকলে ছাড়ব না। আমরা আধাসেনাকে স্যালুট করি। তাঁদের সম্মান করি”।
অনুব্রত মণ্ডল এদিন কর্মীদের উজ্জীবিত করার জন্য নকুলদানা বিলি করেন। মঞ্চ থেকে নকুলদানা কর্মীদের উদ্দেশে ছড়ান। আর তা কুড়ানোর জন্য কর্মীরা আছড়ে পড়েন। মঞ্চে বসে থাকা নেতাদের হাতেও নকুনদানা দেন অনুব্রত। খণ্ডঘোষ বিধানসভা এলাকাতেও নকুলদানা থিওরি কার্যকর হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানান। সভায় অনুব্রত বলেন, মা-মাটি-মানুষের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে একের পর এক উন্নয়ন করছেন। তিনি মিথ্যা কথা জানেন না। মিথ্যা কথা বলেন না। আর নরেন্দ্র মোদি ঝাড়া মিথ্যেবাদী। মিথ্যা কথা ছাড়া তাঁর কোনও কথা নেই। তাঁর মুখে-চোখে মস্তানির ছাপ। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গে মস্তানির ছাপ চলছে না।
অনুব্রত আরও বলেন, নোট বাতিল করে প্রধানমন্ত্রী মানুষকে ‘ভিখারি’ বানিয়েছেন। আর নিজে বড়লোক হয়েছেন। জাল টাকা বিজেপি পার্টি অফিসে ঢুকিয়েছে। অসমে এনআরসি করে ২৫ লক্ষ বাঙালি হিন্দু এবং ১৫ লক্ষ মুসলিমকে অসম ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছে। গুজরাত থেকে বিহারীকে হটানোর নির্দেশ দেওয়া হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো কোনও গুজরাত, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, হরিয়ানা কিংবা উত্তরপ্রদেশের মানুষকে এরাজ্য থেকে চলে যেতে বলেননি। তিনি মানুষের কথা চিন্তা করেন। তিনি খেটেখাওয়া, দিনমজুর, চাষির কথা চিন্তা করেন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে চাষ নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ দেন মমতা। মোদি ’১৯ শেই দেশের ক্ষমতা থেকে চলে যাবেন। বাজপেয়ির মতো নেতা ফিরে আসেননি। কার্গিল যুদ্ধের পর বাজপেয়ির মতো নেতা ফিরে আসতে পারেননি। ১২০’র বেশি সিট পাবে না বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লির আলো দেখাবেন।