মোদী এই ভোটে পরাজিত হবেন। তিনি দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। এবারের লোকসভা নির্বাচনের পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবেন। বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোর পাশাপাশি এবার ঠিক এমনই কথা বললেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। গতকাল হলদিয়া ও লালগড়ে সভা করেন তিনি। আর ওই দুই জায়গাতেই মমতাকে ‘বাংলার বাঘিনী’ বলে উল্লেখ করেন।
বুধবার তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারীর প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন চন্দ্রবাবু। মোদী দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘মোদী এই ভোটে পরাজিত হবেন। তিনি দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বাংলা, উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কেরলে বিজেপি ও এনডিএ-র কোনও জায়গা নেই। এখানে বিজেপি কোনও আসন পাবে না। আমরা সকলে একসঙ্গে আছি।’
মমতার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে গতকাল তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারীর হয়ে হলদিয়া হেলিপ্যাড ময়দানে সভা করেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলেগু দেশম পার্টির সুপ্রিমো চন্দ্রবাবু নাইডু। আজ বৃহস্পতিবারও তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভা করবেন তিনি। পাশাপাশি ভোট পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে চন্দ্রবাবু বলেন, ‘সম্প্রতি বাংলায় এসেছিলেন মোদী। আমি তাঁকে সোজাসুজি প্রশ্ন করতে চাই, হলদিয়া তথা বাংলার জন্য কী করেছেন আপনি? তার উত্তর আপনাকে প্রথমে দিতে হবে। আমি গর্বিতভাবে বলতে চাই, এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত ভাল কাজ করেছেন। মোদীকে চ্যালেঞ্জ করছি, গত ৫ বছরে আপনি যা উন্নয়ন করেছেন, আর মমতা দিদি কী কাজ করেছেন, তা নিয়ে তুলনা হোক।’
এরপরই মোদী ও মমতার তুলনা করে চন্দ্রবাবু বলেন, ‘মোদী প্রচারপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী। আর মমতা গরিব মানুষের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সব সময় গরিব মানুষের জন্য ভাবছেন ও কাজ করছেন। মোদী নোটবন্দি করেছিলেন। বলেছিলেন, দুর্নীতি শেষ হবে, সমস্ত কালো টাকা উদ্ধার হবে। এছাড়া আরও অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিছুই রাখেননি তিনি। মোদীর এক-একটি পোশাকের দাম ১০ থেকে ২০ লক্ষ টাকা। সেখানে মমতা দিদি খুব সাধারণ হ্যান্ডলুমের শাড়ি পরেন। এটাই দিদির সরলতা।’
হলদিয়ার সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে মহাজোট করে কেন্দ্রীয় সরকার গড়ার ডাকও দেন চন্দ্রবাবু। তিনি বলেন, ‘মমতাদিদি বাংলার বাঘিনী। আগামীদিনে দিদি ভারতবর্ষের বাঘিনী হবেন। সেদিন বেশি দূরে নেই। আমি দিদিকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করছি। বাংলা যা ভাবে, আগামীকাল সারা ভারতবর্ষ তাই ভাবে। সেইদিন এসে গিয়েছে।’ একইভাবে লালগড়ের সভা থেকেও কড়া ভাষায় মোদীর সমালোচনা করে মমতার সমর্থনে চন্দ্রবাবু বলেন, আগামীদিনে দেশ নতুন প্রধানমন্ত্রী পেতে চলেছে। এবার ভোটের পরেই নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।