নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করায় ছবির প্রযোজকদের আইনি নোটিস পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও ছবির গান, শুটিংয়ে রেলের কামরা জ্বালান-সহ নানা কারণে বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ায় নরেন্দ্র মোদীর জীবনীভিত্তিক সিনেমা ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’র মুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হল। পরবর্তী নোটিস জারি না হওয়া পর্যন্ত ছবির প্রকাশ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রোডিউসার সন্দীপ এস সিংহ। টুইট করে তিনি বলেছেন, আমাদের ছবি পিএম নরেন্দ্র মোদী ৫ এপ্রিল রিলিজ হচ্ছে না, খবরটা নিশ্চিত করছি। শীঘ্রই এ ব্যাপারে আপডেট দেব।
প্রসঙ্গত, ছবিটি ১২ এপ্রিল মুক্তি পাবে বলে আগে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রডিউসাররা ‘জনসাধারণের চাহিদা, দাবি’র যুক্তি খাড়া করে মুক্তি এক সপ্তাহ এগিয়ে আনেন। তবে কেন্দ্রীয় ফিল্ম সার্টিফিকেশন বোর্ড (সিবিএফসি) জানিয়ে দেয়, তারা এখনও ছবিটিকে ছাড়পত্র দেয়নি। সেই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। কংগ্রেস-সহ বাকি বিরোধীরাও লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব শুরুর এক সপ্তাহ আগে ওই ছবির প্রকাশ নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। এমনকি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থও হয়েছিল তারা। বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটের মুখে এই ছবি মুক্তি পেলে প্রচারে বাড়তি সুবিধা পাবে বিজেপি। তাই ভোটপর্ব মেটা পর্যন্ত তার প্রকাশ পেছনোর দাবি করে তারা।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত গতকালই আগামী ৮ এপ্রিল, সোমবার ছবির মুক্তির ওপর কংগ্রেস নেতা আমন পানোয়ারের স্থগিতাদেশের আবেদনের শুনানি করতে সম্মতি দেয়। বিচারপতি এস এ বোবদের বেঞ্চে সেই শুনানি হবে। তাঁর আইনজীবী এ এম সিংভি বলেন, বিবেক ওবেরয় অভিনীত ছবির মুক্তিতে হস্তক্ষেপ করতে অস্বীকার করেছে দুটি হাইকোর্ট। ছবিটি এখন মুক্তি পেলে সংবিধানের উল্লিখিত অবাধ, বৈধ নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রভাবিত হবে বলে সওয়াল করেন তিনি। এই বায়োপিকের বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির মতো কংগ্রেস নেতারাও। সিব্বলের অভিযোগ ছিল, এই বায়োপিকের সঙ্গে শিল্পকলার কোনও সম্পর্ক নেই। নির্বাচনের আগে অতিরিক্ত সুবিধা পেতেই তা তৈরি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ ছবির গান নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। ট্রেলার মুক্তির পর তাতে গীতিকার জাভেদ আখতার ও সমীরের নাম থাকায় তা নিয়েও বিতর্ক হয়। দু’জনেই তাতে তীব্র আপত্তি জানিয়ে বলেছিলেন, ওই বায়োপিকের জন্য তাঁরা কোনও গান লেখেননি। অভিযোগ উঠেছিল, দুই বর্ষীয়ান গীতিকারের নাম ব্যবহার করে ছবির গানগুলিকে হিট করানোর চেষ্টা চলছে। হাতে আর এক সপ্তাহও বাকি নেই। একেবারে দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। কিন্তু ভোটের আগে বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’র।