প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারবারই এই দাবি করে এসেছেন যে, তিনি দেশের ‘চৌকিদার’। তবে উল্টোদিকে বিরোধীদের কটাক্ষ, মোদী দেশের নয়, আম্বানি-আদানিদের চৌকিদার। সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে চলা এই ডামাডোলের মধ্যেই মোদী তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে নিজের নামের আগে লিখে দেন ‘চৌকিদার’। তারপরই অমিত শাহ, রাজনাথ সিং থেকে শুরু করে বিজেপির সব কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাই টুইটার প্রোফাইলে নিজের নামের আগে ‘চৌকিদার’ কথাটি বসিয়ে দিয়েছেন। প্রত্যেকেই এই বার্তা দিয়েছেন যে, ‘প্রধানমন্ত্রীর মতোই আমিও চৌকিদার।’ এভাবে ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’-প্রচারে ভোটের হাওয়া যখন তাতিয়ে চলেছে গেরুয়া শিবির, ঠিক তখনই তাল কাটলেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, নমোর কথা মেনে সবাই চৌকিদার হয়ে গেলেও, তিনি তা হতে পারবেন না। কারণ, তিনি ব্রাহ্মণ।
রবিবার এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাত্কার দিতে গিয়ে স্বামী স্পষ্ট বলে দেন, ‘আমি চৌকিদার হতে পারব না। কারণ আমি এক জন ব্রাহ্মণ। আমি নির্দেশ দেব আর চৌকিদারেরা সেই নির্দেশ পালন করবে।’ জাতপাত নিয়ে নাক উঁচু হিসেবে আগেও নিজের পরিচিতি দিয়েছেন বিজেপির এই নেতা। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এই বারও এরকম ভাবে জাত উল্লেখ করে করা তাঁর মন্তব্যকে ভালো চোখে দেখেননি অনেকেই। তাঁর এই মন্তব্যের ১৫ সেকেন্ডের ক্লিপ ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চিন্তাধারার সমালোচনা শুরু করে দেন নেটিজেনরা।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের একদম দোরগোড়ায়৷ আগামী ১১ এপ্রিল দেশজুড়ে প্রথম দফার ভোট৷ রাফাল যুদ্ধবিমান থেকে নীরব মোদী– একের পর এক ইস্যুতে গলায় চেপে বসেছে বিরোধীদের স্লোগান, ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ ৷ পাশাপাশি পুলওয়ামায় নিরাপত্তার গাফিলতির অভিযোগ তো রয়েছেই। এই সব থেকে রক্ষা পেতেই নির্বাচনের আগে ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ প্রচার শুরু করেছেন মোদী। তাঁর অংশ হয়েই টুইটার হ্যান্ডেলে একে একে নাম বদলাচ্ছিলেন বিজেপি নেতা-নেত্রীরা ৷ যার জেরে স্বভাবতই প্রশ্নের সম্মুখীন হন বিজেপি সাংসদ স্বামী৷ কেন তিনি ট্যুইটার হ্যান্ডেলে নিজের নাম পরিবর্তন করলেন না ? সেই নিয়ে একাধিক বার প্রশ্ন করা হলেও এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি৷ অবশেষে, রবিবার মুখ খুলে স্বামী স্পষ্ট করে দিলেন, এই চৌকিদার ট্রেন্ডের হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দিতে নারাজ তিনি৷