তীব্র রোদ উপেক্ষা করে গতকাল জামুড়িয়াতে মুনমুন সেনের জন্যে অপেক্ষা করছিলেন সকলে। তিনি গাড়ি থেকে নামতেই শুরু হল পুষ্পবৃষ্টি। কেউ কাছ থেকে দেখতে চাইছেন তাঁকে, কেউ বা মুঠোফোনে বন্দী করতে চাইছেন তাঁকে।সবার আবদার মেটাতে ধার্য সময়ের বেশ পরে সভা শুরু হয়।
মুনমুন সেনের সমর্থনে হওয়া ওই সভায় আসানসোল পুরসভার মেয়র তৃণমূলের জিতেন্দ্র তিওয়ারি কাউন্সিলরদের জানান, পাঁচ হাজারের বেশি ‘লিড’ দিলে এক কোটি টাকা, তিন হাজারের বেশি দিলে ৫০ লক্ষ, দু’হাজার ও এক হাজারের বেশি ‘লিড’ দিতে পারলে যথাক্রমে ৩০ ও ১০ লক্ষ টাকা মিলবে।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, প্রথমে প্রভাত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক দলীয় কাউন্সিলরের কাছে তাঁর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীর ‘লিড’ কত হবে, তা জানতে চান আসানসোলের মেয়র। তিনি ‘এক হাজার’ বলতেই মেয়র বলেন, ‘‘দশ লাখ।’’ পরে জিতেন্দ্র জানতে চান, ‘‘পাঁচ হাজারের বেশি লিড কে দিতে পারবেন বলুন?
২০১৪ সালে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে বর্ষীয়ান রাজনীতিক বাসুদেব আচারিয়াকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন মুনমুন সেন৷ এ বার দল তাঁকে আসানসোল কেন্দ্রের প্রার্থী করেছেন৷ সাংসদ হওয়ার সুবাদে গত পাঁচ বছরে নিজেকে রাজনৈতিক ভাবে নিজেকে অনেক পরিণত করেছেন মুনমুন৷ যার প্রমাণ মিলল মঙ্গলবার পাণ্ডবেশ্বরে নির্বাচনী সভায়৷ ২০১৪ সালে বাঁকুড়া তাঁর নির্বাচনী সভায় উপস্থিত হয়ে নিজেকে অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের মেয়ে বলে পরিচয় দিয়েছিলেন মুনমুন৷ এদিন পাণ্ডবেশ্বরে বাঁকোলা এরিয়া অফিস সংলগ্ন ময়দানে জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে উপস্থিত জনতাকে বোঝালেন, কী ভাবে সংসদে কাজ হয়৷ এক জন সাংসদ তাঁর কোটার টাকা কী ভাবে খরচ করেন৷ কাদের মাধ্যমে খরচ করেন৷ মুনমুনের সাফ কথা, ‘সাংসদ হয়ে জনগনের সার্বিক উন্নয়নের কাজ করাটা আমর কর্তব্য৷ বাঁকুড়ার মতো সেই কর্তব্য আমি আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে করতে এসেছি৷ এখানকার জনগনের ভালবাসা প্রয়োজন৷’
সভায় মুনমুন জানিয়ে দেন, ‘আগামী দিনে তাঁর মেয়েরাও রাজনীতিতে আসবে৷ তবে এখনই নয়৷’ আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারের জন্য পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে আসবে বলেও জানিয়েছেন৷ এদিন সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল ৫টায়৷ কিন্তু মুনমুনকে একবার দেখার জন্য দুপুর ৩টে থেকেই জমায়েত হয়েছিল৷ খনি অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ বাস ও গাড়ি করে বাঁকোলা এরিয়া অফিস সংলগ্ন ময়দানে ভিড় করেন৷ মুনমুন মঞ্চে উঠতেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে দলীয় কর্মী–সমর্থকরাও মোবাইল নিয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে যান৷ ভিড় সামলাতে পুলিশ ও দলীয় কর্মীরা রীতিমতো হিমশিম খান৷ সভায় উপস্থিত ছিলেন পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন চক্রবর্তী, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি।