রক্তে পিচ্ছিল পথ, বাতাসে তীব্র পোড়া গন্ধ, রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দেহাংশ এবং প্রিয়জন হারানোর যন্ত্রণা – পুলওয়ামাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরে চিত্রটা ছিল এমনই। ৪২ জন জওয়ানের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। কিছুদিন আগেই শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সুরাটের এক পাত্র-পাত্রী নিজেদের বিয়ের জন্য রাখা ১৬ লক্ষ টাকা দান করেছেন। এবার আবারও এক নজির গড়লেন ভদোদরার নব দম্পতি। শহীদ জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাতে বিয়ের অনুষ্ঠানের আগে শোভাযাত্রা বের করলেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বিয়েতে অতিথিদের থেকে পাওয়া সমস্ত অর্থ শহিদদের পরিবারের জন্য দান করলেন তাঁরা।
পুলওয়ামার ঘটনার পরেই শহিদ সিআরপিএফ জওয়ানদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা নেন গুজরাটের ভদোদরার কারেলিবাগ এলাকার ভিরাস পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, কীভাবে তা করবেন প্রথমে ভেবে উঠতে পারছিলেন না। পরে ঠিক করেন সামনেই বাড়ির এক সদস্য মহেশের বিয়ে উপলক্ষ্যে বাড়িতে আসা অতিথিরা যা আর্থিক উপহার দেবেন তা পুরোটাই শহিদদের পরিবারগুলির জন্য দান করে দেবেন তাঁরা। বিষয়টি মহেশকে জানাতে তিনি এগিয়ে আসেন পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত করতে। অর্থের পরিমাণ যাতে আরও বাড়ে তাই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন জীবনসঙ্গী হতে চলা দীপিকার সঙ্গেও। সবকিছু শুনে নিজের বাড়িতে পাওয়া আর্থিক উপহারও এই কাজে দান করার প্রস্তাব দেন দীপিকা আর তারপর পরিকল্পনা মতো রবিবার বিয়ের অনুষ্ঠানের পরে রীতিমতো শোভাযাত্রা করে সংগ্রহীত অর্থ শহিদদের পরিবারগুলিকে দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে দিয়ে আসা হয়।
শোভাযাত্রায় দেশাত্মবোধক গান বাজানোর পাশাপাশি সবার হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। হাতে জাতীয় পতাকা ও একটি পোস্টার নিয়েছিলেন মহেশ ও দীপিকা। সেই পোস্টারে লেখা ছিল, কে বলেছে যে ভারতে মাত্র ১৪২৭টি সিংহ আছে! দেশের সুরক্ষার জন্য সীমান্তেই তো ১৩ লাখ সিংহ দাঁড়িয়ে রয়েছে। গোটা শহর ঘোরে তাঁদের এই শোভাযাত্রা। বেলুন এবং জাতীয় পতাকা দিয়ে নবদম্পতিকে স্বাগত জানান এলাকার বাসিন্দারা।
রথের সঙ্গে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া কিছু মানুষের পরনে ছিল রঙীন পাগড়ি। আবার কয়েকজন পরেছিলেন সেনাবাহিনীর ধাঁচের পোশাক। পোস্টার হাতে শহিদ সিআরপিএফ জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানান তাঁরা।