‘হাউ ইজ দ্য জোশ?’
‘হাই স্যর!’
সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি ছবি ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর নায়ক ভিকি কৌশলের সঙ্গে তাঁর অধীনস্থ কমান্ডোবাহিনীর এই কথোপকথনভিত্তিক সংলাপ অধুনা বিজেপি নেতাদের মুখে মুখে ফিরছে। অর্থাৎ, ‘জোশ’ যাকে বলে, তুঙ্গে। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি যখন তাদের জোশতুঙ্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, তখন পুলওয়ামার হামলা চোখে আঙুল দিয়ে সারা দেশকে দেখিয়ে দিল, ‘জোশ’ উচ্চগ্রামে থাকতে পারে। কিন্তু ‘হোশ’ (হুঁশ) ফেরেনি মোদী সরকারের। ভারতীয় সেনা গোয়েন্দাদের সূত্রে পাওয়া তথ্যই বলছে, গত কয়েকবছরে কাশ্মীর উপত্যকায় ক্রমশ বেড়েছে জঙ্গী দলে নাম লেখানো যুবকদের সংখ্যা।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার বছরে যে সংখ্যা ছিল ৫৩, গতবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯১। পক্ষান্তরে, লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে জঙ্গী হামলায় সেনা জওয়ানদের মৃত্যুর সংখ্যাও। ২ তরফে এই ক্রমবর্ধমান সংখ্যা কেন্দ্রীয় সরকারের গোচরে নেই। এমন নয়। কিন্তু তাতেও নর্থ ব্লকের হুঁশ ফেরেনি বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
কাশ্মীরের যুবকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেওয়া হচ্ছে। একদিকে প্রচুর অর্থ। অন্যদিকে, বেপরোয়া এবং উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে মদত। তার সঙ্গেই রয়েছে ধর্মীয় উসকানি এবং ‘শহীদ’ হলে পরিবারের পাশে আজীবন দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুিতও। ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপে নজরদারি বাড়িয়েও লাভ হয়নি। জঙ্গীরা নিত্যনতুন ফিকির বার করছে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের।
জঙ্গীদের প্রশিক্ষণ দিতে নিয়ে আসা হচ্ছে মূলত আফগানিস্তানের গেরিলা যুদ্ধে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদেরও। সূত্রের খবর, নগদ অর্থের টোপ দিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে শিশু ও মহিলাদেরও। উপত্যকায় এনএসজি নামানোয় সেনার সঙ্গে তাদের সমন্বয়েরও অভাব ঘটছে মাঝেমধ্যে। এখন প্রশ্ন হল— পুলওয়ামার হামলা কি শিক্ষা দিতে পারবে? জোশের বদলে হুঁশ কি ফিরবে? যদিও সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে মোদী সরকার নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলেইছে একপ্রকার। তাই এখনও তাদের হুঁশ ফেরেনি বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।