জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলায় শহীদ বাবলু সাঁতরার পরিবারের পাশে দাঁড়াবে বাংলার ভলিবল মহল। হাওড়ার বাউড়িয়ার চককাশীর বাবলু ভলিবলার ছিলেন। হাওড়া নিয়মিত বাউড়িয়া থেকে হাওড়ার ক্লাবে আসা-যাওয়ার খরচ যোগাতে না পারায় যেতে পারেননি রাজ্য ভলিবল খেলার ডাকে কিন্তু জেলার হয়ে সাব জুনিয়র ও জুনিয়র পর্যায়েও খেলেছিলেন।
হাওড়ার ভলিবলে গত চার দশক ধরে কাজ করা প্রাক্তন ভলিবলার তথা কোচ সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন “ছেলেটাকে জেলা পর্যায়ের খেলায় দেখেছিলাম। লম্বা চেহারার বাবলু ভালো স্ম্যাশার ছিল। তবে ভালো কোচিংয়ের অভাবে টেকনিক্যালি বেশ দুর্বল ছিল। স্কুল পর্যায়ে ওর খেলা দেখে ওকে রাজ্য লিগের কোনও টিমে দেওয়ার কথা ভেবে মধ্য হাওড়ার অন্নপূর্ণা ব্যায়াম সমিতিতে ট্রায়ালে ডেকেছিলাম। কিন্তু আর্থিক দুরবস্থার কারণে ট্রায়ালে আসতে পারত না। তবে ১৮-১৯ বছরেই সেনাতে চাকরি নিয়ে চলে যাওয়ায় ওর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। আজ সেই বাবলুর মর্মান্তিক মৃত্যুটা মেনে নিতে পারছি না”।
কলকাতা ভলিবলের অন্যতম সেরা কোচ প্রসেনজিৎ দত্ত বলছিলেন, ‘বাবলুকে জুনিয়র পর্যায়ে দেখেছিলাম বেশ কয়েকটা ট্রায়াল ক্যাম্পে। তখন আমিও খেলতাম। ওর মৃত্যুর পর জানলাম সেনাবাহিনীতে গিয়েও ও ভলিবল খেলাটা ছাড়েনি। শুনলাম চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ফিরে ও নিজের গ্রামে ভলিবলের কোচিং ক্যাম্পও খুলতে চেয়েছিল। দেশের এমন বীর সেনানীর ভলিবল প্রেম আমাদের আকৃষ্ট করেছে। তাই ওর জন্য আমরা কিছু করতে চাই।’
সৌমেন ও হাওড়া জেলার আর এক কর্তা চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়রা ইতিমধ্যেই বাবলুর জন্য স্মরণসভা করেছেন। বাবলুর স্মৃতিতে একটা টুর্নামেন্টও করার কথা ভেবেছেন তাঁরা। প্রসেনজিতরা কয়েকদিনের মধ্যেই করবেন। তারপর বাবলুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে প্রয়োজনীয় সাহায্য করবার আশ্বাস দেবেন। হয়তো নামী ভলিবলার হওয়া হয়নি তাঁর কিন্তু তাঁর পুরোনো বন্ধুমহল তাঁকে ভোলেননি। তাই তাঁর অকালমৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন বন্ধুরা।