পাশবিক! না না পাশবিক বলা ভুল৷ পশুরা আর যাই হোক, এতটা নির্মম নয়। তাই বলা ভাল অমানবিক। কারণ একটি বা দু’টি নয়, একসঙ্গে ১৬টি কুকুরছানার মৃতদেহ উদ্ধার হল এনআরএস হাসপাতাল চত্বরে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরজুড়ে৷
রবিবার দুপুর একটা নাগাদ সুপার অফিসের অদূরে হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডের পিছনে বর্জ্য ফেলার জায়গায় দু’টি কালো রঙের পলিথিনের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা যায়। এক হাসপাতাল কর্মীর স্ত্রী পুতুল রায়ই প্রথম দেখতে পান, বস্তার মধ্যে থেকে উঁকি মারছে একটি কুকুরছানা। আর প্যাকেটগুলির পাশেই বসে ছিল একটি মা-কুকুর।
পুতুলদেবীর সন্দেহ হওয়ায় তিনি উঁকিঝুঁকি দেন প্যাকেটগুলিতে। এবং কৌতূহলী হয়ে প্যাকেটের মুখগুলি খুলতেই দেখতে পান ভিতরে আরও বেশ কয়েকটি ছানা রয়েছে। এরপরই প্যাকেটদুটি খুলে বের করে আনা হয় মোট ১৭টি কুকুরছানা৷ যার মধ্যে কেবল একটিই জীবিত। ওই জীবিত কুকুরছানাটিকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি এক পশুপ্রেমী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেখানেই তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, বস্তাটিতে খাবারের প্যাকেটও ছিল। প্রাথমিক অনুমান, খাবারে বিষের প্রভাবে কুকুরছানাদের মৃত্যু হয়েছে। বাইরে থেকে কেউ কুকুরছানাগুলিকে মেরে হাসপাতালে চত্বরে ফেলে গিয়েছে, নাকি ভিতরেই এমন নৃশংস কাজ হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও মিলছে না।
কে বা কারা এই ঘৃণ্য কাজ করল, তাদের খুঁজে বের করতে হাসপাতালের ওই অংশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখারও দাবি ওঠে। কিন্তু রবিবার ছুটির দিন হওয়ার ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের শীর্ষকর্তাদের অধিকাংশই অনুপস্থিত ছিলেন। তাই দেখা যায়নি সিসিটিভি ফুটেজ। ফলে কে বা কারা বস্তাটি ফেলে গিয়েছিল, তা চিহ্নিত করাও এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় কলকাতা পুরভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, অত্যন্ত নিন্দাজনক ঘটনা। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এনআরএসের সুপার ডাঃ সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, শুনলাম, এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে। আশ্চর্য লাগছে। সোমবার ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে। অন্যদিকে, যে বা যারা এই কাজ করেছে, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রবিবার রাত পর্যন্ত ঘটনাস্থলে ক্ষোভ দেখান পশুপ্রেমীরা।