শীতের পারদ নেমে যাওয়ার সঙ্গেই বাড়ছিলো উৎসবের উত্তেজনার পারদ৷ রাত ১২ টা বাজার আগেই যদিও বড়দিনের উদযাপন শুরু হয়ে গেছিল৷ অন্যান্য বারের মতই পার্কস্ট্রিটের সম্মোহনকে এড়াতে পারেননি কেউই৷ সন্ধ্যে থেকেই ভিড় জমে যায় রাস্তায় রাস্তায়৷ লাল টুপি, কেকের মাতোয়ারা গন্ধ, সেলফি, আলো সব মিলিয়ে উত্তেজনা পারদ তুঙ্গে৷ ঠান্ডা তখন রীতিমত বেপাত্তা৷ রাত ১২ টা বাজতেই ক্রিসমাস ক্যারলের সঙ্গে উৎসবের মেজাজ চড়ল অারো এক ধাপ৷
বড়দিনের সকালে ছুটির আনন্দে গা ভাসাতে ভিক্টোরিয়া থেকে নিকো পার্কে নামল মানুষের ঢল। কলকাতা শহরের বিভিন্ন হলিডে ডেস্টিনেশনে এখন চলছে উৎসবের মেজাজ।চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের ঢল চোখে পড়ার মতো। দিনের শুরুতেই খোস মেজাজে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। দেখা দিয়েছেন তিনি৷ খাঁচার ভেতরে তার রাজকীয় পদচারণা দেখতে সেখানেই উপচে পড়েছে ভিড়। বড়দিনের ছুটি প্রাণভরে উপভোগ করতে পেরে সবথেকে খুশি অবশ্যই কচিকাঁচারা। আলিপুর চিড়িয়াখানায় সকাল থেকেই চলছে পিকনিকের মেজাজ, পরিবার নিয়ে খাওয়া দাওয়া। এবার শীতে চিড়িয়াখানার নতুন অতিথি তিন শিম্পাঞ্জির চালচলন, হাবভাব দেখতে ভিড় জমাচ্ছে কচিকাঁচারা।
নিকোপার্কের পরিস্থিতিও একইরকম। সেখানেও সকাল থেকেই মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। সকলকেই বিভিন্ন রাইডের মজা নিতে দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও ইকো পার্কেও বেশ ভিড় হয়েছে৷ ভিড় জমছে সিনেমাহল এবং রেঁস্তোরাগুলিতেও৷
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, আজ বিকেল চারটের পর গাড়ি চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে পার্ক স্ট্রিট। জওহরলাল নেহরু রোড থেকে উড স্ট্রিট পর্যন্ত এই নিয়ম জারি থাকবে। মেয়ো রোডের গান্ধী মূর্তি থেকে জওহরলাল নেহরু রোড পর্যন্ত বন্ধ থাকবে রাস্তা। বন্ধ থাকবে রাসেল স্ট্রিট, লিটল রাসেল স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিটের একাংশ এবং ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের কিছু অংশ৷ জওহরলাল নেহরু রোড থেকে ফ্রি স্কুল স্ট্রিট হয়ে রয়েড স্ট্রিটের দিকের রাস্তা থাকছে খোলা। হো চি মিন সরণি থেকে শর্ট স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট হয়ে উড স্ট্রিট দিয়ে চলাচল করবে গাড়ি। ধর্মতলা থেকে দক্ষিণের দিকে যাওয়ার গাড়ি পার্ক স্ট্রিট ফ্লাইওভার ধরার জন্য অনুরোধ করেছে কলকাতা পুলিশ। এছাড়াও আজ গভীর রাত পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করবে৷
অন্যদিকে কথা মতই জাঁকিয়ে শীত রয়ে গেছে বড়দিনে৷ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১২.৯ ডিগ্রিতে যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম৷ বছরের শেষে আরও কমবে তাপমাত্রা। ২৯ ডিসেম্বর থেকেই জাঁকিয়ে শীত পড়বে। এখনই বিভিন্ন জেলার তাপমাত্রা দশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। তবুও যতই ঠান্ডা পড়ুক, উৎসবের আবহ যে তাকে মোটেও পাত্তা দিচ্ছে না তা স্পষ্টই বুঝিয়ে শহরজুড়ে নামা মানুষের ঢল৷