রাজ্যে লগ্নি আনার লক্ষ্যে এবার ইউরোপ যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের শিল্পোন্নতির দিকে বিশেষ নজর দিয়েছেন মমতা। গতবারও বিদেশ সফরে গিয়ে রাজ্যের জন্য লগ্নির ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। আর এবার লগ্নি টানতে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট আর ইতালির মিলান, এই দুই শহরে যাচ্ছেন মমতা। রাজ্য থেকে তাঁর সফরসঙ্গী হচ্ছেন শিল্পপতিদের একটি প্রতিনিধি দল। এই দলে রয়েছেন আইটিসির এমডি সঞ্জীব পুরি, আরপি গ্রুপের সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, কেভেন্টার্সের মায়াঙ্ক জালান, লক্ষ্মী গ্রুপের রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, প্যাটন গ্রুপের সঞ্জয় বুধিয়া এবং উমেশ চৌধুরি। সরকারি ভাবে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, মুখ্যসচিব মলয় দে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সচিব গৌতম সান্যাল, অর্থ দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী, পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের এমডি বন্দনা যাদব।
আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর দুবাই হয়ে ফ্রাঙ্কফুর্টে পৌঁছবেন তিনি। সেখানে ইন্দো–জার্মান বণিকসভার আমন্ত্রণে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পাশাপাশি তিনি সে দেশের শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন। জার্মানি এমনিতেই গাড়ি শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও উৎপাদন শিল্প, ইস্পাত শিল্প, যন্ত্রাংশ উৎপাদন শিল্পে খ্যাতি বিশ্বজোড়া। তাই এ রাজ্যে শিল্পায়নের লক্ষ্যে নিঃসন্দেহে এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতালিও চর্মশিল্পের জন্য বিখ্যাত। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পেও সে দেশের অনেক সুনাম। এই দুই ক্ষেত্র থেকে এ রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে মিলানেও তাঁর বেশ কয়েকটি কর্মসূচী রয়েছে। জার্মানি এবং ইতালির মানুষের কাছে এ রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রকে আকর্ষণীয় করে তুলতে মুখ্যমন্ত্রীর সফরে বেশ কিছু পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। এমনিতেই দার্জিলিং, সান্দাকফু, সুন্দরবন, গঙ্গাসাগর, বাঁকুড়ার–বিষ্ণুপুর, নদীয়ার মায়াপুর বিদেশি পর্যটকদের কাছে যথেষ্ট আকর্ষণীয়। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদোৎসবকেও বিদেশিদের কাছে তুলে ধরতে বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। টেমস উৎসবে শারদোৎসব নিয়ে এ রাজ্যের প্যাভিলিয়ন যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে ইতিমধ্যেই মিলান এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট দুই শহরেই আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মিলানে থাকছেন ২১ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর। তারপর দুবাই হয়ে ২৮ তারিখ কলকাতা ফিরছেন। দুবাইতেও তাঁর একদিন থাকার কথা। গতবারের বিদেশ সফরের মত এবারও তিনি রাজ্যে লগ্নি আনতে সফল হবেন-এমনটাই ভরসা রাজ্যবাসীর ও ওয়াকিবহাল মহলের।