এন্ট্রান্স টেস্ট নয়, যাদবপুরে আসলে এলিমিনেশন টেস্ট নেয়া হয়েছে। মূলত এই প্রশ্নপত্রের ছত্রে ছত্রে উঠে এসেছে , নবাগত বা ভর্তি হতে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে থেকে কারা রেডিক্যাল বা উগ্র রাষ্ট্রবিরোধী ভাবধারায় বিশ্বাসী, তা যেন যাচাইকোরে নেওয়ার জন্যেই সাজানো হয়েছে এই প্রশ্ন। কারা এখন থেকেই রাষ্ট্রবিরোধী ভাবধারায় বিশ্বাসী। কারা প্রচলিত ভাবধারা ও রাষ্ট্রনীতির বিরোধী, এই বিষয়গুলো আগে জেনে নেওয়াই যেন মূল উদ্দেশ্য। অর্থাৎ এই পরীক্ষার উদ্দেশ্যে এন্ট্রান্স বা প্রবেশিকা নয়, আসলে যেন এর উদ্দেশ্যই হলো এলিমিনেশন বা ছাঁটাই প্রক্রিয়া। যারা প্রচলিত রাষ্ট্রনীতির অনুরাগী বা সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকদের অপছন্দের বা আরও স্পষ্টভাষায় বলতে গেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী এবং বর্তমান রাজ্য সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরোধী, তাদেরকে রেখে বাকিদেরকে এক কথায় ছেটে ফেলে দেওয়া। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক মনজিৎ মন্ডলের অভিযোগ, ‘ যাদবপুরে আসলে ইতিহাস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে ছাত্রদের ও যুব সাম্প্রদায়কে ইনডকট্রিন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অর্থাৎ প্রচলিত যা ধারণা বা নিয়ম তাতে বিশ্বাস না রেখে ভর্তি হতে আসা ছাত্রছাত্রীদের ওপরে এক ধরণের পূর্বনির্ধারিত মতামত চাপিয়ে দিয়ে তাতেই বিশ্বাস করতে বাধ্য করার চেষ্টা চলছে।
যেমন একটি প্রশ্নে এসেছিল, ‘তোমার প্রিয় মহিলা রাজনীতিবিদ কে এবং কেন?’। এই প্রশ্নের উত্তরে কেউ তার প্রিয় রাজনীতিবিদের নাম হয়তো লিখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম, বা ইন্দিরা গান্ধীর নাম্বা অন্য কারো নাম। কিন্তু যিনি খাতা দেখছেন তিনি ব্যাক্তিগত ভাবে সেই রাজনীতিবিদকে হয়তো পছন্দ নয় করতে পারেন। সেটা স্বাভাবিক। নম্বর কাটা গিয়েছে সেখানেই। সেখানে হয়তো যে ছাত্র বা ছাত্রী বৃন্দা কারাতের নাম লিখেছে সে তুলনামূলক ভাবে বেশি নম্বর পেয়েছে। আবার কিছু প্রশ্ন মার্ক্স কে নিয়ে এসেছে। অর্থাৎ যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে আসছে তাদের মধ্যে কত জন কার্ল মার্ক্স পড়েছে , এটা বুঝে নেয়া। যে ভাবেই হোক তারা চাইছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে বামপন্থাকে বাঁচিয়ে রাখতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে পাওয়া খবর , এই আয়সাইনমেন্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপককে সরাসরি দেয়া হয়েছে সিপিমের কেন্দ্র কমিটির কিছু প্রভাবশালী সদস্যের তরফে।