এই গরমে হাঁসফাঁসের হাত থেকে বাঁচতে বাড়িতে হররোজ এসি চালাচ্ছেন কি? ঠান্ডা ঘরে চাদরমুড়ি দিয়ে ঘুমোচ্ছেন কি রোজ রাতে?
এসিতে শরীর মাথা ঠান্ডা হলেও, মাস পেরোলে আসা ইলেকট্রিসিটি বিলে বড়োসড়ো অংকের ধাক্কাটার কথা ভেবে বিন্দু বিন্দু ঘামও কি খানিকটা জমছে কপালে?
তাহলে দ্বিধা কাটানোর জন্য আপনার জেনে রাখা ভাল, এসির তাপমাত্রা ২০-২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সেট করে ঘর ঠান্ডা করে চাদরমুড়ি দিয়ে আদতে কোনও উপকারই হচ্ছে না আপনার।
কেন তা জানতে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে ঘরের তাপমাত্রা আর শরীরের তাপমাত্রার মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকার ফলে ঠিক কি কি হয়?
আমাদের দেহের তাপমাত্রা মোটামুটি ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি, তাই ২৩ থেকে ৩৯ ডিগ্রিই হল আমাদের শরীরের জন্য মোটামুটিভাবে সহনীয় তাপমাত্রা। তার বেশি হেরফের সহ্য করতে পারেনা আমাদের দেহ।
যখন আপনি ২০-২১ ডিগ্রিতে এসি চালান, তখন ঘরের তাপমাত্রা আমাদের শরীরের সহনীয় মাত্রার থেকে নিচে নেমে যায় বেশ খানিকটা- যা বাধা হয়ে দাঁড়ায় দেহের স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালনার প্রক্রিয়ায়। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলা হয় হাইপোথার্মিয়া।
ঠান্ডা সহ্য না হলে শুরু হয় সাময়িক হাঁচি কাশি। তবে একটানা বহুক্ষণ এসির মধ্যে থাকলে দেহের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ঠিকভাবে রক্ত চলাচল না হওয়ার কারণে পরবর্তী ক্ষেত্রে হতে পারে আর্থারাইটিস ও উচ্চরক্তচাপজনিত অসুখবিসুখ। আবার যেহেতু এসিতে থাকার কারণে ঘামও হয়না শরীরে, সেহেতু ক্ষতিকারক টক্সিনগুলোও বেরোতে পারেনা দেহ থেকে। আস্তে আস্তে শুরু হয় চুলকানি, স্কিন এলার্জির মতো সমস্যা।
এদিকে খুব কম তাপমাত্রায় এসি চলতে থাকলে এসির কম্প্রেসর কাজ করে তার পূর্ণ শক্তিতে। আর যেহেতু তাতে বিদ্যুৎ খরচও বেশি হয়, তাই ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তাঁর বেশি তাপমাত্রাতেই চালিয়ে হালকা করে ফ্যান চালানোটাই হল শরীরের জন্য সবচাইতে ভালো সঙ্গে হয় বিদ্যুতের সাশ্রয়ও।
২৬ ডিগ্রিতে এসি চালিয়ে রোজ রাতে আপনি বাঁচাতে পারেন গড়ে ৫ ইউনিট বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের খরচ কমানোর পাশাপাশি যা আমাদের সাহায্য করবে পৃথিবীর উষ্ণায়নের সমস্যার সঙ্গে যুঝতেও।