ক্রমশই ঊর্ধ্বগামী করোনা সংক্রমণ। কলকাতার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন পুরসভা। বিভিন্ন বরোতে বেলাগাম সংক্রমণ রুখতে বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার তরফে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সূত্রের খবর, সংক্রমণে রাশ টানতে কীভাবে আক্রান্তদের আইসোলেশন নিশ্চিত করা যায়, পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের উপস্থিতিতে তার পথ খোঁজা হবে ওই বৈঠকে। নতুন বছরের শুরু থেকেই সবাইকে নাজেহাল করে ছাড়ছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। ডেল্টা আর ওমিক্রন, জোড়া স্ট্রেনের তাণ্ডবে জেরবার অবস্থা। তবে, স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে করোনা আগ্রাসনের তীব্রতা কমছে। তবে এখনই তাতে নিশ্চিন্ত হতে রাজি নয় কলকাতা পুরসভা। কারণ, দৈনিক সংক্রমণের হার নীচের দিকে থাকলেও, পুরপ্রশাসনের মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে সরকারি রেকর্ডের বাইরে থেকে যাওয়া সংক্রমণ।
উল্লেখ্য, এমনিতে রাজ্যে যত সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তার সিংহভাগই কলকাতায়। কয়েকটি বরো এলাকায় যেভাবে করোনার বিস্ফোরণ ঘটে চলেছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কলকাতা পুরসভা। সেই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ১০ নম্বর বরো। করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরো সব চেয়ে বেশি চিন্তার কারণ ছিল। তৃতীয় ঢেউয়ের সময়েও সেখানে একই ছবি। বাড়াতে হয়েছে কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা। এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি বরোর পরিস্থিতি চিন্তায় রাখছে পুরকর্তৃপক্ষকে। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞমহল সূত্রে খবর, তৃতীয় ঢেউয়ে অধিকাংশ লোকজন করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। জ্বর, সর্দি, কাশি হলে ঠান্ডা লেগেছে ধরে নিয়ে ঘনিষ্ঠমহলে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাচ্ছেন অনেকে। চিকিৎসকদের আশঙ্কা, এর ফলে প্রকৃত আক্রান্তদের চিহ্নিত করাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কলকাতা পুরসভারও আশঙ্কা এখানেই।
পুরসভা সূত্র অনুযায়ী, একাধিক বরোতে ঝোড়ো গতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। পুরকর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, সংক্রমিত অনেকেই নিজেদের আইসোলেশনে না রেখে সমাজে অবাধে মেলামেশা করছেন। তার ফলে গোষ্ঠী সংক্রমণ বড় আকার নিয়েছে। করোনা আক্রান্তদের চিহ্নিত করে কীভাবে তাঁদের আইসোলেশন সুনিশ্চিত করা যায়, তা ঠিক করতে বৃহস্পতিবার দশ নম্বর বরোয় একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, অনেকে এটাকে হালকা ভাবে নিচ্ছেন। তাই বৈঠক ডাকা হয়েছে। আইসোলেশন নিয়ে কথা হবে। এদিন হাতিবাগানের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনার বুস্টার ডোজ নেন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ।