কাবুল দখলের পরেই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবান সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রধান এমানুল্লা সামাগনি বলেছিলেন, ‘শরিয়তি আইনের পরিধির মধ্যে থেকে যদি মহিলারা প্রশাসন ও সরকারে অংশ নিতে চান তাঁদের স্বাগত।’ কিন্তু সরকার গঠনের পরেই স্বমেজাজে ফিরেছে তালিবান। জেহাদি সরকারের নির্দেশে মেয়েদের বাদ দিয়েই আফগানিস্তানে খুলেছে স্কুল। তালিবদের এহেন পদক্ষেপে এবার অসন্তোষ প্রকাশ করল ইউনেস্কো এবং ইউনিসেফ। শিক্ষার অধিকার থেকে আফগান মেয়েদের বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে বলে তোপ দেগেছে রাষ্ট্রসংঘের দুই সংস্থা।
এক আফগান সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মেয়েদের স্কুল বন্ধ রাখা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ইউনেস্কো-র ডিরেক্টর জেনারেল অডরে আজুলে। তিনি বলেন, ‘যদি মেয়েদের স্কুল বন্ধ থাকে তাহলে ওই পড়ুয়াদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। মেয়েদের স্কুলে ফেরত আসতে না দেওয়া হলে শিক্ষাব্যবস্থায় এর শোচনীয় পরিণাম হবে। আফগানিস্তানের ভবিষ্যত এই পড়ুয়াদের উপর নির্ভর করছে। তাই আমরা সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে আবেদন করছি তারা যেন দ্রুত মেয়েদের স্কুলে ফেরানোর ব্যবস্থা করে।’ একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইউনিসেফ প্রধান হেনরিয়েটা ফর। তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই উদ্বিগ্ন, কারণ অনেক মেয়েদের আর স্কুলে ফেরত আসতে দেওয়া হবে না।’
প্রসঙ্গত, মহিলাদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি ভেঙে মেয়েদের শিক্ষার অধিকার কার্যত ছিনিয়ে নিয়েছে তালিবান। শনিবার থেকে খুলেছে সে দেশের উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলি। ১৩-১৮ বছরের পড়ুয়াদের ক্লাসে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশিকায় ঠাঁই পায়নি ছাত্রীরা। অর্থাৎ শুধুমাত্র ছেলেদের বিদ্যালয়ে আসার কথা জানানো হয়েছে আফগানিস্তানের শিক্ষামন্ত্রকের তরফে। উল্লেখ্য, নয়ের দশকের তালিবানি জমানায় আফগান মেয়েরা স্কুলে যেতে পারত না। কিন্তু এবার ক্ষমতায় আসার পর তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, চিন্তা নেই। মেয়েদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে না। কিন্তু কাজে এবং কথায় অনেকটাই যে পার্থক্য রয়েছে, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল।