শনিবার টেস্ট অভিষেকের পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হতে চলেছে কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারের। সাতের দশকে অমিতাভ বচ্চন যখন রুপোলি পর্দা দাপাচ্ছেন, কিশোর কুমার সুরের জাদুতে আচ্ছন্ন করে রাখছেন ভক্তদের, ক্রিকেট মাঠে অভিষেক হয়েছিল আর এক বিস্ময়মানবের। গত পাঁচ দশকে তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটে বিভিন্ন ভূমিকায় দেখেছে ভক্তরা। নিজেকে কী ভাবে দেখছেন তিনি? “অমিতাভ বচ্চন এখনও পর্যন্ত দেশের সব চেয়ে বড় তারকা, প্রয়াত কিশোর কুমার চিরকালীন এবং অবিস্মরণীয়। এঁদের সঙ্গে একই আসনে রাখার ভাবনাতেও আমি আপ্লুত।” এমনই জানালেন সানি।
পোর্ট অব স্পেনে ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেকের স্মৃতিচারণ করলেন তিনি। গাভাস্কার বলেছেন, “শেষ পর্যন্ত দেশের জার্সিতে নামতে পরব ভেবে দারুণ লাগছিল। একটু চাপেও ছিলাম। কারণ আমাদের বিপক্ষ দলের অধিনায়কের নাম ছিল স্যর গ্যারি সোবার্স।” তাঁর অভিষেক সিরিজে করা ৭৭৪ রান এখনও অন্যতম সেরা মাইলফলক। তবে সানি মনে করেন, তিনি অভিষেক সিরিজে ৩৫০-৪০০ রানও করলেও খুশি থাকতেন। সানি বলেছেন, “ওই ৭৭৪ রানের মধ্যে যদি ৩৩৪ রান আমার আদর্শ এমএল জয়সিমা এবং বড় মনের মানুষ ও দুরন্ত প্রতিভা সেলিম দুরানির মধ্যে ভাগ করে দিতে পারতাম, খুব খুশি হতাম। তা হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরে ইংল্যান্ড সফরে এই দু’জনের দলে থাকা পাকা হয়ে যেত।”
পাশাপাশি, ১৯৭১ সালে অভিষেক হলেও গাভাস্কার জানিয়েছেন, দিলীপ সরদেশাই এবং অজিত ওয়াড়েকর অবসর নেওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ, ১৯৭৪ পর্যন্ত তিনি দলে কোনও চাপ অনুভব করেননি। তিনি জানিয়েছেন, “সেই সময়ের দলের অন্য কাউকে অসম্মান না করেও বলছি, তখন আমাদের দলকে বড় রান করতে হলে ভিশি (গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ) আর আমাকে বেশির ভাগ দায়িত্ব নিতে হত।” উল্লেখ্য, ১৭ বছরের সুদীর্ঘ খেলোয়াড় জীবনে গাস্কর কখনও মাঠে হেলমেট ব্যবহার করেননি। মোকাবিলা করেছেন জেফ থমসন, মাইকেল হোল্ডিং বা ম্যালকম মার্শালের মতো তাবড় পেসারদের। শর্ট বলে কখনও কাঁপেননি ক্রিজে। “যখন আমি ক্লাব ক্রিকেটে খেলা শুরু করি, তখন বিপক্ষ দলের বোলাররা বাউন্সার দিত। হয়তো তাঁদের বলের গতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের হত না, তবে আমি বাউন্সারকে রান করার সুযোগ হিসেবে দেখতাম। বল থেকে চোখ সরাতাম না কখনও। ফলে বল দ্রুত গতিতে আসলেও সেটা সামলানো যেত।” বলেছেন গাওস্কর। পাশাপাশি ভারতীয় পিচ নিয়ে বিদেশি ক্রিকেটারদের সমালোচনাকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন সানি। “যখন ভারত ৩৬ রানে অলআউট হয়ে গেল তখন কপিল দেব, সচিন, সৌরভ বা সহবাগের মন্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কি ওই দেশের মিডিয়া বা টিভি চ্যানেলে? একেবারেই নয়। তা হলে আমরা কেন গুরুত্ব দেব বিদেশি ক্রিকেটারদের মন্তব্যকে?” জানিয়েছেন এই কিংবদন্তি ওপেনার।