এশিয়ায় যখন দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনৈতিক নেতাদের দাপট ও দৌরাত্ম অব্যাহত, ঠিক তখনই ভিন্ন ছবি দেখা গেল ইউরোপে। দুর্নীতির দায়ে প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজিকে তিন বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে প্যারিসের একটি আদালত। আধুনিক ফ্রান্সের ইতিহাসে সারকোজিই হলেন প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, যাঁকে ভোগ করতে হচ্ছে কারাবাস।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছেন প্যারিসের এক আদালতের বিচারক। একই সঙ্গে নিকোলাসের দুই সহযোগী গিলবার্ট আজিবার্ট এবং থিয়েরি হারজোগকেও তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। তবে জেলে যেতে হচ্ছে না ৬৬ বছর বয়সী প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে। বাড়িতে থেকেই ওই সাজা ভোগ করতে পারবেন প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তবে সেক্ষেত্রে শরীরে একটি ইলেক্ট্রিক ট্যাগ পরতে হবে সারকোজিকে।
এদিন বিকেলে রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বিচারক বলেছেন, “সারকোজি জানতেন তিনি যা করছেন তা ভুল। তাঁর এবং আইনজীবী হারজগের কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে খুব খারাপ দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছে। তাঁদের এসব কাজ অনৈতিক প্রভাব পরিচালিত এবং পেশাদারি গোপনীয়তা লঙ্ঘনের সামিল।” তবে আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে আবেদনও করতে পারেন নিকোলাস সারকোজি।
উল্লেখ্য, ‘ওয়্যারটেপিং কেস’ নামে পরিচিত মামলাটির কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালে। সেসময় তদন্তকারীরা সারকোজির বিরুদ্ধে দুর্নীতির খোঁজে তাঁর এবং আইনজীবী হারজগের ফোনে আড়ি পেতেছিলেন। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, বিখ্যাত কসমেটিক সংস্থা লরিয়েলের উত্তরাধিকারী লিলিয়ান বেটেনকোর্টের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণ করে তা লুকানোর চেষ্টা করেছেন সারকোজি। নিজের রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে একটি তদন্তের গোপন তথ্যের বিনিময়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে বিদেশে লোভনীয় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন ৬৬ বছর বয়সী এই প্রাক্তন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।