করোনা সংক্রমণের জন্য কলকাতা হাইকোর্ট থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আর সেই নির্দেশই যথাযথভাবে পালন করল গোটা বাংলা। অন্যান্যবারের মত এবছর শব্দবাজির কান ঝালাপালা করা শব্দ নেই। রাতের আকাশে ফানুস-হাউইয়ের ঘোরাঘুরি নেই। এমনকী তুবড়ি বা রংমশালের আলোয় আলোকিত হওয়াও নেই। এমন কালীপুজো শেষ কবে শহরবাসী দেখেছে তা সত্তরোর্ধ্ব প্রৌঢ়ও স্মরণে আনতে পারলেন না। ফল? বাজি পোড়ানোয় গত কয়েক বছরে দূষণের মাত্রা যে জায়গায় গিয়েছিল এবার তার অর্ধেকও নয়।
এদিন রাজ্য পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অন্যান্য বছর কালীপুজোর দিন বাতাসে যে পরিমাণ দূষণের মাত্রা ছড়ায় সেই তুলনায় এবার বেশ কম। করোনার আতঙ্কে মানুষ এবার বাজি না ফাটিয়ে আলো জ্বালিয়েই দীপাবলি উদযাপন করেছেন। আদালতের নির্দেশিকা বা পুলিশের চোখরাঙানির বদলে মানুষের সচেতনতাই এবার আর বাতাসকে মারাত্মকভাবে দূষিত হতে দিল না।
গতকাল বাতাসে দূষণের মাত্রা মাপার জন্য শহরের একাধিক জায়গায় যন্ত্র বসানো হয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে। তবে পর্ষদের আধিকারিকদের কথায়, গতকাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুরোপুরি পরিস্থিতি বোঝা যাবে আজ। কারণ অধিক রাতে যে কিছু এলাকায় বাজি ফাটলো তার রিপোর্ট আজ পাওয়া যাবে। নিয়ম অনুযায়ী দূষণের মাত্রা ০-৫০ রেঞ্জে যদি থাকে তবে তা ভাল। ৫১-১০০ হল সন্তোষজনক, ১০১-২০০ মাঝামাঝি, ২০১ থেকে ৩০০ খারাপ, ৩০১ থেকে ৪০০ খুব খারাপ, ৪০১-৫০০ অত্যন্ত খারাপ। এবার বেশিরভাগ জায়গাতেই অবশ্য মাত্রা ১০০ থেকে ১৫০র মধ্যে ছিল। অর্থাৎ ভালর দিকেই বলা চলে।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ডা. কল্যাণ রুদ্র অবশ্য জানিয়েছেন, স্রেফ আতসবাজি কম পোড়ানোর জন্য বাতাসে দূষণের মাত্রা কমেছে এমনটা ঠিক নয়। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বিগত বছরগুলোতে এমন নানা পদক্ষেপ করেছে। তাতেই দূষণের মাত্রা কমেছে। সারা বছর লেদার কমপ্লেক্সে চামড়া পোড়ানো হত। তা বন্ধ করা গিয়েছে। শহরে পুরনো গাড়ির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। বিগত কয়েক বছরে প্রচুর চওড়া পাতার গাছ লাগানো হয়েছে। সার্বিকভাবে এগুলোই দূষণের মাত্রা কমিয়েছে।