সবজি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে রীতিমত চোখের জলে নাকের জলে হচ্ছেন দেশের সাধারণ মানুষ। পেঁয়াজের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে নাকাল গৃহস্থরা। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকালই পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে আর্জি জানালেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী তথা এনসিপি-র প্রধান শরদ পাওয়ার। তাঁর মতে, এই সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের ভাবমূর্তি ধাক্কা খেতে পারে। পাকিস্তান এবং পেঁয়াজ রফতানিকারক অন্যান্য দেশগুলি এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে বলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শরদ।
পীযূষ গয়ালের সঙ্গে পেঁয়াজের রফতানি নিয়ে আলোচনার কথাও টুইট করে জানিয়েছেন শরদ। তাঁর দাবি, গয়াল তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, বাণিজ্য, অর্থ এবং উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রক ঐক্যমতে পৌঁছলে ওই সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেওয়ার ভাবনা চিন্তা করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন টুইটে শরদ লিখেছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের ভাল চাহিদা রয়েছে এবং আমরা ধারাবাহিক ভাবে তা রফতানি করে আসছি, এটা আমি তাঁর গয়ালের গোচরে এনেছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের আচমকা একটা সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের ধারাবাহিক সরবরাহকারী হিসাবে ভারতের ভাবমূর্তিতেই জোরাল ধাক্কা দিতে পারে।’’
এরপর অন্য একটি টুইটে শরদ পাওয়ার বলেছেন, ‘‘আমি এটাও জোর দিয়ে বলেছি যে, এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে পাকিস্তান এবং বিশ্বের অন্যান্য পেঁয়াজ রফতানিকারক দেশগুলি।’’ তাঁর দাবি কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে মহারাষ্ট্রের কৃষকদের মধ্যে বিপুল ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলি জুড়ে বিস্তৃত দেশের ‘অনিয়ন বেল্ট’। ওই রাজ্যগুলি থেকে প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, উপসাগরীয় দেশগুলি-সহ বহু জায়গাতেই রফতানি হয়। কিন্তু গতকাল কেন্দ্রীয় নিষেধাজ্ঞার জেরে তা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে।
কেন্দ্রের যুক্তি, প্রবল বর্ষণের জেরে কর্নাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশে গ্রীষ্মের ফসল নষ্ট হওয়ার মুখে। তার প্রভাব পড়েছে দেশীয় বাজারে পেঁয়াজের যোগানে। তার ফলে মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার লাসলগাঁওতে পেঁয়াজের দাম বিপুল চড়ে গিয়েছে। গত মার্চের থেকে দ্বিগুণ দাম হয়েছে চলতি মাসে। তাই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে লাগাম পরাতে রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছে বিভিন্ন কৃষক সংগঠন।