প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেকে ‘চৌকিদার’ বলে দাবি করেন। অথচ তাঁর রাজত্বেই একের পর এক ব্যাংক জালিয়াত হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। না, বিরোধীরা নয়। সংসদে দাঁড়িয়ে এই স্বীকারোক্তি করেছেন খোদ কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। এক সাংসদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, একজন বা দু’জন নয়, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশ ছেড়েছে মোট ৩৮ জন ব্যাংক জালিয়াত।
সাংসদের প্রশ্নের উত্তরে অনুরাগ ঠাকুর জানান, ২০১৫ সালের জানুয়ারির পর এমন ৩৮ জন শিল্পপতি ভারত ছেড়েছেন যাদের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির তদন্ত করছে সিবিআই। এই ৩৮ জন ঠিক কত টাকার দুর্নীতি করেছেন, সেটা জনসমক্ষে আনেনি কেন্দ্র। তবে সংখ্যাটা যে বিপুল হবে তাতে কোনও সংশয় নেই। কারণ, ২০১৫ সালের পর যারা ভারত ছেড়েছে তাঁদের মধ্যে বিজয় মালিয়া, মেহুল চোকসি, নীরব মোদিদেরও নাম আছে। যারা কিনা হাজার হাজার কোটি টাকার জালিয়াতিতে অভিযুক্ত। চিন্তার বিষয় হল, গত বছরও সংসদে একই প্রশ্ন করা হয়েছিল সরকারকে। তৎকালীন অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ২৭ জন ঋণখেলাপি দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অর্থাৎ ২০১৮ থেকে ২০১৯ এই একবছরে ভারত ছেড়েছে আরও ১১ জন জালিয়াত।
তবে কেন্দ্রের দাবি, তাঁরা চুপ করে বসে নেই। অনুরাগ ঠাকুর জানিয়েছেন, এই পলাতক শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে সমস্তরকম আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে সরকারের তরফে। ইতিমধ্যেই, এদের মধ্যে ২০ জনকে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরা যে যে দেশে আছে সেইসব দেশকে এদের প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ করেছে মোদী সরকার। ইন্টারপোলের কাছে মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করার অনুরোধও করেছে ভারত। ১১ জনের বিরুদ্ধে প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের অধীনে তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও তো এদের দেশে ফেরানো গেল না, কটাক্ষ বিরোধীদের।