প্লাস্টিক ব্যবহারের কারণে এমনিতেই দূষণের মাত্রা বেড়েছে সুন্দরবনে। সেটি রুখতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছিল। ম্যানগ্রোভ চারাগাছ তৈরি করতে এতদিন প্লাস্টিকের ঠোঙা ব্যবহার করা হত। তাতে চারার বৃদ্ধি কম ঘটেছিল। এবার চটের তৈরি প্যাকেট (জিয়ো-জুট) ব্যবহার করে সাফল্য পাওয়া গেছে। অল্পদিনেই গাছের দ্বিগুণ বৃদ্ধি ঘটেছে। আর এই সাফল্য এসেছে ‘এমজিএন আরইজিএ’-র মাধ্যমে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সুন্দরবনে শুরু হয়েছে ‘৫ কোটি ম্যানগ্রোভ রোপণ কর্মসূচি’। এই উদ্দেশ্য সফল করতে বন দফতর এবং সুন্দরবনের নদী অধ্যুষিত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি একশো দিনের কর্মীদের কাজে লাগিয়েছেন। আর চলতি বছরেই ‘জিয়ো-জুটে’র মাধ্যমে নদী বাঁধের ধার দিয়ে ম্যানগ্রোভ চারা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এই ‘জিয়ো-জুট’এর ব্যবহার সুন্দরবন তথা দেশে সর্ব প্রথম।
পরিবেশবিদদের মতে, চটের প্যাকেটে তৈরি চারা সরাসরি তুলে চট-সহ বসিয়ে দিতে হবে। পরে চট পচে গিয়ে গাছের সার হিসাবে ব্যবহৃত হবে। তাতে গাছ স্বাস্থ্যকর হবে, দ্রুত বৃদ্ধিও ঘটবে।
দফতরের আধিকারিক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সুন্দরবনে এই প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি সবুজ নার্সারি (জিয়ো-জুট) ব্যবহার করে ম্যানগ্রোভ চারা তৈরি করা হয়েছে। এতে আমরা একশো শতাংশ সফল হয়েছি বলে দাবি করতেই পারি। কারণ এর আগে আমরা প্লাস্টিক প্যাকেটে বা ঠোঙায় চারা করে দেখেছি। রোপণযোগ্য চারা তৈরি করতে তখন সময় লাগতো প্রায় ছ’মাস। জিয়ো-জুটে তৈরি চারা এক মাসের মধ্যেই রোপণের উপযুক্ত হয়ে গিয়েছে।এই চারা বেশ হৃষ্টপুষ্ট এবং সুস্থ সবল। বৃদ্ধিও ভালো!”
ক্যানিং ১নং ব্লকের নিকারীঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মাতলা নদীর চর, গোসাবা ব্লকের রাঙাবেলিয়া, এবং ছোটমোল্লাখালিতে এই ‘জিয়ো-জুট’ ব্যবহারের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এই ম্যানগ্রোভ চারা তৈরির কাজ করছেন। সুন্দরী, গরান, গর্জন, ধুদুল, পশুর, কেওড়া, ওড়া, তোড়া এবং বাইন গাছের পুনর্জন্মের কাজ চলছে।