আগে থেকেই আর্থিক মন্দার জেরে ধুঁকছিল দেশের শিল্প৷ এরই মধ্যে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো এসে জুটেছে করোনা৷ দীর্ঘ লকডাউনের কারণে জিএসটি আদায় থেকে শুরু করে আমদানি-রপ্তানি শুল্কে বিটার ক্ষতি হয়েছে কেন্দ্রের৷ রাজস্ব সংগ্রহেও চরম ধাক্কা লেগেছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও এক দফায় সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণের দিকে ঝাঁপাচ্ছে কেন্দ্রের মোদী সরকার৷ আনা হচ্ছে সম্পূর্ণ নতুন বিলগ্নিকরণ নীতি৷ আর সেই নীতিতে লাটে উঠতে পারে কর্মীদের পেশনের ব্যবস্থা৷ জারি হতে পারে চর্চায় স্বেচ্ছাবসর প্যাকেজ৷
জানা গিয়েছে, লকডাউন পর্বে রেলের আয়ের ভাঁড়ার সে ভাবে ভরেনি। পণ্যবাহী ট্রেন চালু থাকলেও শিল্পক্ষেত্রে চাহিদা তলানিতে এসে ঠেকায় পণ্য পরিবহণ থেকে আয় হয়নি তেমনি। সারা দেশে বেশির ভাগ যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে না। লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি পাওয়ায় একাধিক বার রেলকে অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের টাকা ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। যাত্রীভাড়া ছাড়া বিজ্ঞাপন এবং অন্যান্য ক্ষেত্র থেকেও রেলের ভাঁড়ারে সে ভাবে টাকা আসেনি। আর এর ফলে বিপুল অর্থসঙ্কটের মুখে পড়েছে ভারতীয় রেল৷ পরিস্থিতি এমন হয়েছে, আগামী দিনে কর্মীদের পেনশন কীভাবে দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে অনিশ্চয়তা দানা বেঁধেছে৷
অন্যদিকে, চলতি আর্থিক বছরের ২৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বেসরকারিকরণের টার্গেট নিয়েছে কেন্দ্র৷ নতুন বিলগ্নিকরণ নীতিও দ্রুত চূড়ান্ত করতে চলেছে কেন্দ্র৷ ওই নীতির অন্যতম লক্ষ্য হতে পারে ব্যাঙ্ক, বিমা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে এক ছাতার নীচে আনা৷ যাতে ওই সংস্থাকে প্যাকেজ দরে বিক্রি করে দেওয়া যায়৷ আর তা রূপায়ণের প্রস্তুতিপর্বের মধ্যেই তীব্র হয়েছে কর্মী ছাঁটাইয়ের জল্পনা৷ ভারত পেট্রলিয়াম স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প ঘোষণা করেছে৷ এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মীদের বিনা বেতনে ছুটি পাঠানো হচ্ছে৷ সরকারি কর্মীদেরও স্বেচ্ছা অবসরের অফার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হচ্ছে৷ সবমিলিয়ে কেন্দ্রের নয়া এই ব্যবস্থায় কর্মচারী মহলে ‘আচ্ছে দিনে’র আতঙ্ক তৈরি হয়েছে৷