দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কড়া হচ্ছে প্রশাসন। এমতাবস্থায় কোনও রকম জমায়েত একেবারেই নিষিদ্ধ। কিন্তু হিন্দু নেতারা যেন আইন ভাঙতে ভালবাসে, পুলিশ-প্রশাসন তাঁর সম্পত্তি, এমনটাই ভেবে নিয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় যুব হিন্দু বাহিনীর অধ্যক্ষ অনুরাগ ভৃগুবংশী। লকডাউন ভাঙা তো বটেই তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, এক মহিলার সঙ্গে দুর্ব্যবহার, জালিয়াতি, পুলিশকে হুমকি, এমন নানাবিধ অভিযোগ ছিল। এমন ‘কীর্তিমান’ পুরুষকে তাই গ্রেফতার করল মথুরা পুলিশ।
লকডাউন লঙ্ঘন করায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। সেই রাগে ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করেছিলেন অনুরাগ। তিনি স্পষ্ট জানান, তাঁর গায়ে হাত পড়লে ২৯টি রাজ্যের দলীয় কর্মীরা রাস্তায় নেমে পড়বে। হাইওয়ে প্রভারী থানাকে বলিয়া সীমান্তে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে এবং থানাধ্যক্ষ সারাজীবন থানায় ঢুকতে পারবেন না। পুলিশকে এই পরিমাণ হুমকি দেওয়ার পর গ্রেফতার করা ছাড়া আর উপায় ছিল না।
পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯ জুলাই শনিবার অর্থাৎ লকডাউনের দিন হওয়া সত্ত্বেও মথুরায় এক সভার আয়োজন করেন অনুরাগ। সেই সভায় এসে উপস্থিত হন এক যিনি পেশায় আইনজীবী বলে জানা গেছে। তিনি ওই সভায় এসে অনুরাগের বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ করে তাঁকে ‘দালাল’ বলতে থাকেন। মহিলাটি জানান, তাঁর স্বামীর বদলি করিয়ে দেওয়ার জন্য এক লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন হিন্দু বাহিনীর নেতা। এর মধ্যে শিশুসন্তান অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই টাকা ফেরত চান ওই মহিলা, কিন্তু অনুরাগ আদৌ তা ফেরত দেননি। এরপর তাঁর সন্তান কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা যায় বলে মহিলাটির অভিযোগ।
ভিডিওয় দেখা গেছে, মহিলাটি সভাস্থলে অনুরাগের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করার সঙ্গে সঙ্গে দলে দলে হিন্দু বাহিনীর সদস্যরা জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে দিতে মহিলাটিকে একপ্রকার ধাক্কাধাক্কি করে এলাকা ছাড়া করছে।
লখনউ থেকে গ্রেফতার করে মথুরা আনার সময়েও তাঁর তেজ কমেনি। এক ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পুলিশের জিপে বসে তিনি ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘হর হর মহাদেব’ বলে গলা ফাটাচ্ছেন। যদিও তাঁকে কোনও দেবতাই বাঁচাতে আসেননি তা বলাই বাহুল্য।