প্যাংগং লেকের ধারে ৫ নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্ট থেকে ৮ নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্ট পর্যন্ত মজবুত ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে চীন। সেখান থেকে সরার নামগন্ধ নেই। ২৯ জুলাই পাওয়া উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে এই ছবিটাই সামনে এসেছে। বলা যেতে পারে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিচ্ছে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। আমেরিকার ম্যাক্সার টেকনোলজিসের উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে সেকথাই জানালেন অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল বিনায়ক ভাট।
ম্যাক্সারের উপগ্রহের হাই রেজোলিউশন ক্যামেরার ছবি যা বলছে সেই একই ছবি পাঠিয়েছে ভারতের নিজস্ব গুপ্তচর উপগ্রহ এমিস্যাট। দেখা গিয়েছে, প্যাংগংয়ের ৫ ও ৬ নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্টে সেনা সংখ্যা বাড়িয়েছে চীন। একইসঙ্গে স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে সেখানে। শুধু তাই নয়, উপগ্রহ ছবি বলছে, ওই এলাকায় সেনা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে চীনারা। ২৯ জুলাই প্রাপ্ত ছবিতে দেখা গিয়েছে প্যাংগংয়ের ফিঙ্গার ৬, এবং ফিঙ্গার ৫-এর কাছে মোট ১৩টি চীনা নৌকা দাঁড়িয়ে আছে। যাতে অন্তত ১০ জন করে সেনা পরিবহণ সম্ভব। অর্থাৎ ওই এলাকায় আরও বাড়তি ১৩০ জন সেনা মোতায়েন করেছে চিনারা। এই ফিঙ্গার ফাইভ এলাকা ভারতের দখলে থাকা ফিঙ্গার ফোরের অত্যন্ত কাছের। তাছাড়া, ঐতিহাসিকভাবে ফিঙ্গার এইট পর্যন্ত এলাকা ভারতেরই দখলে থাকার কথা। কিন্তু চীনারা ফিঙ্গার ৫ পর্যন্ত এগিয়ে এসেছে।
অর্থাৎ চীনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন সেনা অপসারণ সম্পূর্ণ শেষ করা হয়েছে বলে বার বার যে দাবি করছেন তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং বাস্তবে তার সঙ্গে মিল নেই। কারণ চীন মনে করছে তারা প্যাংগংয়ে, দেপসাংয়ে এখনও যতটা ঢুকে বসে রয়েছে সেটাই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা। কিন্তু চীনের আঁকা সীমান্তরেখা আসলে ভারতের ভূখণ্ডের অনেকটা ভিতরে। এই বাস্তবটাই মানতে চাইছে না পিপলস লিবারেশন আর্মি। ওই এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে এখনও অনমনীয় চীন। মে মাসে ভারতের দিকে এলাকা দখল করে কেন এতটা এগিয়ে এসেছিল পিএলএ? এবং কেনই বা তারা আগের পুরনো অবস্থানে ফিরতে রাজি নয়? সেনা বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রশ্ন তোলা হলে কোনও সদুত্তর দিতে রাজি নয় চীনের সেনা জেনারেলরা। তাই কূটনৈতিক আলোচনায় সমাধান না হওয়ায় সংঘাতের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। এমনটাই মনে করছেন প্রাক্তন সেনা কর্তা বিনায়ক ভাট।