সেই ২০১৪ সালে সোনপুর বাজারি কয়লা খনি সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণের পর পুনর্বাসনের জায়গা ঠিক করে দেওয়া হলেও এখনও নতুন জায়গায় না হয়েছে জলের ব্যবস্থা, না এসেছে বিদ্যুৎ। অন্য পরিষেবাও নেই। এই অভিযোগ তুলেই মঙ্গলবার রানিগঞ্জ থানার সাতগ্রাম এরিয়ার বাসিন্দারা ইস্টার্ন কোল ফিল্ডের (ইসিএল) স্থানীয় অফিসে বিক্ষোভ দেখান। সকাল দশটা থেকে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে সোনপুর বাজারি খোলামুখ কয়লা খনি সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে ইস্টার্ন কোল ফিল্ড (ইসিএল) কর্তৃপক্ষ। যে সাতটি গ্রাম থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা হয় সেই এলাকাগুলি ভীষণ ভাবে ধসপ্রবণ বলে জানিয়েছিল ইসিএল। ওই এলাকার প্রায় আড়াই হাজার বাসিন্দাকে পুনর্বাসন দেওয়া হয় সোনপুর বাজারি এলাকায়। পুনর্বাসন পাওয়া লোকজনের অভিযোগ, এত দিনেও তাঁদের এলাকায় না এসেছে বিদ্যুতের সংযোগ না করা হয়েছে পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের দাবি করে আসছেন। সেই দাবি না মেটায় এদিন তাঁরা জেনারেল ম্যানেজারের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান।
যে সাতটি গ্রামের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল সেই সব গ্রাম ছিল মূলত আদিবাসীদের। তাঁরা অনেকেই জীবিকার ব্যাপারে ইসিএলের উপরে নির্ভর করতেন। কেউ ঠেলা গাড়ি বা প্যাডেলে টানা ভ্যান চালাতেন। অনেকে আনাজ বিক্রি করতেন। আদিবাসী এলাকার এই গ্রামগুলিতে জল, বিদ্যুৎ প্রভৃতি প্রাথমিক চাহিদা মেটানোর বন্দোবস্তও ছিল। রাস্তাঘাটও ছিল গ্রামগুলিতে। কিন্তু খনি সম্প্রসারণের ফলে গ্রাম গেছে। নতুন জায়গায় প্রাথমিক চাহিদা মেটানোর বন্দোবস্তও করা হয়নি বলে অভিযোগ।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, জমি অধিগ্রহণ করে তাঁদের উচ্ছেদ করার সময় ইসিএল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাঁদের বাসস্থান গড়ে দেওয়ার পাশাপাশি সেখানে পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। উপযুক্ত ভাবে বাজার-হাট, রাস্তাঘাট প্রভৃতি গড়ে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। ইসিএল তাদের জমি-জমা বাড়িঘর প্রভৃতি অধিগ্রহণ করলেও প্রতিশ্রুতি মতো কোনও পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেনি। এ ব্যাপারে বারবার তাঁরা ইসিএল কর্তৃপক্ষ কাছে আবেদন জানিয়েছেন কিন্তু কোনও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, যতক্ষণ না তাঁদের দাবি-দাওয়া পূরণ হচ্ছে ততক্ষণ তাঁরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। বন্ধ থাকবে জেনারেল ম্যানেজারের কার্যালয়ের গেট।