লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ বাবার। তাই আয় নেই। এই অবস্থায় সংসারের হাল ধরতে মাধ্যমিকে অঙ্কে একশোয় একশো পাওয়া ছাত্র এখন শ্রীরামপুরে রেল সেতুর নীচে বিক্রি করছে স্যানিটাইজার, পিপিই কিট, অ্যাপ্রন প্রভৃতি। সাইকেলে অর্ডার সাপ্লাইও করছে।
হুগলির প্রাঞ্জল দে ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র। আগে পড়তেন মাহেশ রামকৃষ্ণ আশ্রম স্কুলে। সেখান থেকেই তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। অঙ্কে তিনি পেয়েছিলেন একশোয় একশো। বরাবরই অঙ্ক তাঁর প্রিয় বিষয়। এখন তিনি অঙ্ক নিয়ে শ্রীরামপুর কলেজে পড়াশোনা করছেন।
প্রাঞ্জলের বাবা প্রদীপ দের হস্তশিল্পের ব্যবসা। কাঠ, বাঁশ প্রভৃতি কাঁচামাল দিয়ে তিনি বানান নানা ধরনের ঘর সাজানোর জিনিস, ওয়াল হ্যাঙ্গিং প্রভৃতি। সে সব তিনি ফেরি করতেন বিভিন্ন মেলায় এবং পর্যটন কেন্দ্রে। এখন লকডাউনের জেরে মাস্ক, স্যানিটাইজার, পিপিই কিট, অ্যাপ্রন প্রভৃতি পাইকারি বিক্রি শুরু করেছেন প্রদীপ দে। শ্রীরামপুরে জিটি রোডের ধারে রেল ব্রিজের তলায় একটা ছোট দোকানে এসব খুচরো ও পাইকারি বিক্রি করছেন। বাড়িতে মাস্ক, পিপিই এবং অ্যাপ্রন তৈরিতে তাঁর সঙ্গে হাত লাগাচ্ছে প্রাঞ্জল। বাবার সঙ্গে সামলাচ্ছে দোকান। আবার দরকার মতো অর্ডার সাপ্লাই করার জন্য মাস্ক, স্যানিটাইজার প্রভৃতি তিনি ব্যাগে ভরে জায়গা মতো সাইকেলে নিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসছেন।
লকডাউন বদলে দিয়েছে অনেক কিছু। বদলে দিয়েছে অনেকের রুটি-রুজি। কেউ হারিয়েছেন কাজ, কেউ বদলেছেন পেশা। এই অবস্থায় জীবনের অঙ্ক হঠাৎ বদলে গেছে প্রাঞ্জলের।