বিগত কয়েক মাস যাবৎ ভারতের শেয়ার বাজারের গ্রাফ ক্রমশ নিম্নমুখী হলেও, জুলাইয়ের শুরুতে লগ্নিকারীদের মধ্যে আশা জাগিয়ে বেশ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ছিল শেয়ার বাজার। করোনার টিকা আবিষ্কার ও অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে, এই আশায় ‘প্যানিক সেল’ (ভয়ে শেয়ার বিক্রি) থেকে বিরত ছিলেন লগ্নিকারীর। তবে গত সপ্তাহের শেষ দিনে ঘটল ছন্দপতন। লাভের টাকা ঘরে তুলতে গত শুক্রবার লগ্নিকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে গিয়েছিল। যার ধাক্কায় এদিন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে সেনসেক্স এবং নিফটি। সোমবার খানিকটা উঠার পর মঙ্গলবার অর্থাৎ আজ, সেনসেক্স আবার একধাক্কায় নেমে গিয়েছে ৭০০ পয়েন্ট। নিম্নমুখী নিফটিও।
এদিন বাজার খোলে লালের কোঠায়। এরপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাগাতার নিচের দিকে নামতে থাকে সূচক। বিশেষ করে ব্যাঙ্কিং, অর্থনৈতিক পরিষেবা এবং ধাতুর শেয়ার গুলি খারাপ ফল করায় নেমে যায় সূচক। এদিন ৭১৩ পয়েন্ট নেমে সেনসেক্স দাঁড়িয়েছে ৩৫, ৯৯০ পয়েন্টে। ২০০ পয়েন্ট নেমে নিফটি দাঁড়িয়েছে ১০, ৫৯১ পয়েন্টে। এদিন এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক এবং কোটাক মাহিদ্রা ব্যাঙ্কের শেয়ার দর সবথেকে বেশি হ্রাস পয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, শেয়ার মার্কেটে ধস নামার প্রধান দু’টি কারণ হচ্ছে, করোনা মহামারী নিয়ে ফের লকডাউনের আশঙ্কা ও বিশ্বের বাজারগুলির ছাপ। এদেশে, লগ্নিকারীদের অনেকেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে আশঙ্কাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। ফলে বিগত দিনে শেয়ার মার্কেট উপরের দিকে থাকায় লাভের টাকা ঘরে তুলতে বিক্রির হিড়িক পড়ে গিয়েছে। এছাড়া, বিদেশি সূচকগুলিও সেই অর্থে ফল না করা প্রভাব পড়েছে ভারতের বাজারে। একই অবস্থা এশিয়ার বাজারগুলির। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে প্রত্যেকটা বাজারের সেনসেক্সই নিম্নমুখী। যার ফলে ধস নেমেছে ভারতীয় শেয়ার বাজারেও।
উল্লেখ্য, সামাজিক দূরত্ব, সচেতনতা অভিযান, সরকারি উদ্যোগ। কোনওকিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না দেশের করোনা সংক্রমণ। প্রায় প্রতিদিনই নিত্যনতুন রেকর্ড গড়ছে মারণ রোগ। মঙ্গলবারও প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে দেশের মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ৯ লক্ষ। মঙ্গলবার সকালে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২৮ হাজার ৪৯৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ লক্ষ ৬ হাজার ৭৫২ জন।