উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে বর্তমানে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির দাবি, তাঁকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট যে এসেছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে বিধায়কের গলায় ফাঁস লেগেই মৃত্যু হয়েছে। এমনকি মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের কথাতেও মিলেছে সেই ইঙ্গিত।
রাজ্য পুলিশ সোমবারই জানিয়েছিল যে, বিধায়কের বুক পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া গিয়েছে। হস্তাক্ষর তাঁরই হলে, সেই কাগজে দুই ব্যক্তিকে বিধায়ক তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন। সেই চিরকুটে দুই ব্যক্তির ছবি ও মোবাইল নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে। ওই দুই ব্যক্তি সুদের কারবার, সমান্তরাল ব্যাঙ্কিংয়ের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, বিধায়কের মৃত্যুর পেছনে রয়েছে আর্থিক লেনদেন। কারণ, রায়গঞ্জ থানায় মৃত বিজেপি বিধায়কের স্ত্রী পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন। এদিকে তাঁর স্ত্রী-র করা অভিযোগে যেমন উঠে আসছে টাকাপয়সা সংক্রান্ত বিষয়, তেমনই তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বিধায়কের বিপুল ধারদেনা ছিল। তাই এক্ষেত্রে দেনা শোধ করতে না পারার জন্যে মানসিক হতাশার বিষয়টিও উঠে এসেছে। সেই জন্যেই আত্মহত্যা কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
জানা গেছে, মোহিনীগঞ্জ মিনি ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার থাকার সময় দুর্নীতির অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এছাড়াও চাল কলের ব্যবসা করতে গিয়ে বিপুল অর্থের লোকসানের বিষয়টিও উঠে আসছে তদন্তে। রায়গঞ্জে সম্পত্তি বন্ধক রেখে নাবার্ডের কাছ থেকে আরও ২৫ লক্ষ টাকা ঋণও নিয়েছিলেন দেবেন্দ্রনাথ রায়। তা নিয়েও তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সুইসাইড নোটের লেখার সঙ্গে দেবেন্দ্রবাবুর হাতের লেখার মিল পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেছে জেলা পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই নোটে মালদার দু’জনের নাম রয়েছে, যারা জমি-ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি ওই ধরনের কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন বিধায়ক? আর এই সমস্ত দিক মাথায় রেখেই তদন্তে নেমেছে রাজ্য পুলিশ।