গত কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। আর শুধু এইটুকু উপসর্গ দেখেই সেই আবাসনের বাসিন্দারা ধরে নিয়েছিলেন সেই বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত। আর এই সন্দেহের জেরেই আজ কাকভোরে উত্তরপাড়ার শিবতলা স্ট্রিটের আবাসনের চারতলা থেকে বৃদ্ধাকে নিচে নামিয়ে দিয়েছিলেন সকলে। দীর্ঘক্ষণ নিচে বসে থাকতে দেখেও কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এগিয়ে আসেননি। পরে ঘটনাটি এলাকার বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কানে যায়। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় সেই বৃদ্ধার চিকিৎসা করিয়ে তাঁকে চারতলার ফ্ল্যাটে ঢুকিয়ে দিয়ে যান সুব্রতবাবু।
বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধা চারতলার ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। একা থাকার জন্য তাঁকে বাজারঘাট নিজেকেই করতে হয়। শুক্রবার সন্ধের দিকে বৃদ্ধার জ্বর আসে। তারপর শনিবার কেটে যায়। আবাসিকদের ধারণা হয় বৃদ্ধা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু বৃদ্ধার চিকিৎসার জন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়ার বদলে তাঁকে তাঁর নিজের ফ্ল্যাট থেকেই তাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সকলে। রবিবার সকালে তাঁকে চারতলা থেকে একতলায় নামিয়ে দেওয়া হয়। তারপর অসহায়ের মতো বৃদ্ধা শুধু খুঁজে বেরিয়েছেন একটু সহানুভূতি, একটু ভালবাসা, একটু সাহায্যের হাত। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি।
কিন্তু খবর পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুব্রত মুখোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তিনিই উত্তরপাড়া থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সুব্রতবাবু উদ্যোগ নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স পাঠান। ততক্ষণে বৃদ্ধা আরও কাহিল হয়ে পড়েছেন। পুলিশ ওই বৃদ্ধাকে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে সমস্ত ধরণের পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, উনি করোনা আক্রান্ত নন। বৃষ্টিতে ভেজার কারণেই ঠান্ডা লেগে জ্বর হয়েছে বৃদ্ধার। এরপর ওষুধপত্র সমেত পুলিশই ওই বৃদ্ধাকে তাঁর ফ্ল্যাটে পৌঁছে দিয়ে যায়। আপাতত কোনও অসুবিধা হলে যে কোনো পরিস্থিতিতে সেই বৃদ্ধার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন সেই কাউন্সিলর।