ডোলা রে, ডোলা রে, হাওয়া হাওয়াই, এক দো তিন… এরকম অসংখ্য গানের নাচের স্টেপ আজও জনপ্রিয়। আর যিনি এই স্টেপ শিখিয়েছিলেন তামাম ভারতবাসীকে, তিনি বলিউডের মাস্টারজী সরোজ খান। প্রবল শ্বাসকষ্টের কাছে হার মেনে যিনি কাল রাত ১২টায় প্রয়াত হয়েছেন। বলিউডের ‘পদ্ম’এর এমন আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ সকলে। তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করছেন সকলেই।
সরোজ খানের প্রিয় ছাত্রীর পাশাপাশি ভাল বন্ধুও ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত। বহু জায়গায় সরোজ নিজেই বলতেন মাধুরীকে নাচ শিখিয়ে অন্যরকমের আনন্দ পান তিনি। ‘ধক ধক গার্ল’ মাধুরীর তো সব বিখ্যাত নাচের পিছনেই রয়েছেন ‘মাস্টারজি’। ‘এক দো তিন’, ‘তাম্মা তাম্মা’, ‘ডোলা রে’—- সরোজ-মাধুরী জুটি প্রতিবারই মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। শেষবার ‘কলঙ্ক’ ছবি ‘তবাহ হো গয়ি’ গানে মাধুরীর কোরিওগ্রাফি করেছিলেন সরোজ খান। দীর্ঘদিন পর জুটির কামব্যাক পারফরম্যান্সও মনজয় করেছিল দর্শকদের। তাঁর প্রয়াণে স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়েছেন মাধুরী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, “আমার গুরু এবং ভাল বন্ধু সরোজজির মৃত্যুতে আমি মর্মাহত। ওঁর কাজের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। নাচের ক্ষেত্রে আমায় সেরা জায়গায় পৌঁছতে সাহায্য করেছিলেন উনি। এই বিশ্ব একজন অসামান্য প্রতিভাকে হারাল। আপনাকে খুব মিস করব।“
ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন করিনা। জানিয়েছেন, মাস্টারজি তাঁকে কী কী শিখিয়েছিলেন। করিনার কথায়, “মাস্টারজি সবসময় বলতেন পা চালাতে না পারলে মুখই চালাও। উনি সবসময় বলতেন নাচকে উপভোগ করো। চোখ দিয়ে হাসো। যাঁরা ওকে ভালবাসেন তাঁরা জানেন সরোজজির জায়গায় কেউ আসতে পারবেন না। ওই এক্সপ্রেশন আর কারও হবে না। আপনাকে খুব ভালোবাসি মাস্টারজি।“
একের পর এক মৃত্যু দেখতে দেখতে ক্লান্ত বিগ বি টুইটে জানিয়েছেন, “জোড়হাতে নতজানু। কিন্তু মন অশান্ত।” অনুপম খেরের দাবি, “সরোজজি প্রথম শিখিয়েছিলেন, নাচ শুধুই শরীরী বিভঙ্গ নয়। তাতে আত্মা আর মনের সংযোগও থাকে।” সরোজ খানের মৃত্যুকে ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ বলে মনে করছেন আর এক সেলেব কোরিওগ্রাফার রেমো। তাপসী পান্নু এটুকু ভেবেই স্বস্তি পাচ্ছেন, একটি নাচের দৃশ্যে তিনি সরোজ খানের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। সেটিই অমূল্য সম্পদ হয়ে রয়ে গেল তাঁর জীবনে। প্রয়াত কোরিওগ্রাফারের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন মনোজ বাজপেয়ী। বিষণ্ণ অক্ষয় কুমার টুইটে জানিয়েছেন, “ঘুম ভাঙল খারাপ খবর শুনে। সরোজজির অভাব কী করে বলিউড পূরণ করবে?”
কথায় আছে লেজেন্ডদের কখনও মৃত্যু হয় না। বিটাউনের ‘মাস্টারজি’ সরোজ খানও মানুষের মনে চিরকাল বেঁচে থাকবেন তাঁর কাজের জন্য, তাঁর ড্যান্স স্টেপসের জন্য।