হালেই করোনা ভাইরাস হানা দিয়েছে ভারতে। এবং তার জেরে চলছে দেশজোড়া লকডাউন। এর অনেক আগে থেকেই ধুঁকছিল ভারতীয় অর্থনীতি। কমে গিয়েছিল দেশের জিডিপি। তবে আর্থিক বৃদ্ধি কমে যাওয়ার দায় এবার পুরোটাই করোনা-সঙ্কটের ওপরে চাপিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বণিকসভা সিআইআই-এর ১২৫তম বার্ষিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস আমাদের অর্থনীতির গতি কমিয়ে দিয়েছে।’
যদিও প্রধানমন্ত্রীর এই দাবি শুনে শিল্পমহলের অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আর্থিক বৃদ্ধির হার করোনা-সঙ্কটের অনেক আগে থেকেই কমতে শুরু করেছিল। লকডাউন শুরুর আগেই জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ৩.১ শতাংশে নেমে এসেছে। সোমবার আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ ভারতের রেটিং কমিয়ে দিয়ে একই সুরে জানিয়েছে, করোনা-সঙ্কটের আগে থেকেই ভারতের অর্থনীতিতে ঝিমুনি চলছিল। ২০১৭-র পর থেকেই মোদী সরকার প্রত্যাশামতো সংস্কার করতে পারেনি।
বণিকসভার এক কর্তা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ আর্থিক বৃদ্ধি কমার কথা স্বীকার করলেও সে জন্য করোনা-কে দায়ী করেছেন। কিন্তু, করোনা-সঙ্কটের অনেক আগেই ২০১৯-এর জুলাই থেকে ২০২০-র মার্চ পর্যন্ত টানা নয় মাস কারখানার উৎপাদন কমেছে। তা সত্ত্বেও সরকার দাবি করে গিয়েছে, আর্থিক বৃদ্ধির হার ৮.৫ শতাংশ ছোঁবে। বাস্তবে ২০১৯-২০-তে বৃদ্ধির হার ৪.২ শতাংশে নেমে এসেছে। কর্পোরেট কর কমিয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টায় লাভ হয়নি।’
ওই সম্মেলনে কৃষি থেকে কয়লা ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বিভিন্ন সিদ্ধান্তের তালিকা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। ভারত এখন লকডাউনকে পিছনে ফেলে আনলক-এর প্রথম দফায় ঢুকে পড়েছে। তাই সে দিক থেকে আমরা বৃদ্ধি ফিরে পেতে শুরু করেছি।’ যদিও রাহুল গান্ধীর বক্তব্য, ‘মুডি’জ মোদীর অর্থনীতির পরিচালনাকে সব থেকে খারাপ রেটিংয়ের স্রেফ এক ধাপ ওপরে রেখেছে। গরিব, ছোট-মাঝারি শিল্পকে সাহায্য না করার অর্থ, আরও খারাপ সময় আসতে চলেছে।’