আজ বিকেলে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে উম্পুন পরিস্থিতি নিয়ে ফের একবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন তিনি৷ উম্পুনের তাণ্ডবের পর কী কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, সেই হিসেবও তুলে ধরেন তিনি। একইসঙ্গে জানান উম্পুন মোকাবিলায় বরাদ্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ টাকা৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ক’মাসে সরকারের কোনও আয় নেই৷ সরকারি কর্মীদের বেতন এবং পেনশন দিতে হচ্ছে৷ কোভিড-১৯ এর জন্যও কোটি কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে৷ এ মাসের ২০ তারিখে ভয়ঙ্কর ঝড়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল৷ ৬ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত৷ দুর্গতদের সাহায্য করার জন্য একটি ত্রাণ তহবিল করা হয়েছে৷
সংবাদমাধ্যমের কাছেও তাঁর আর্জি, আপনারাও একটু আবেদন করবেন, যাতে আমরা সাহায্য পাই৷ টাকা পয়সা ছাড়া, ত্রাণ সামগ্রীও পাঠানো যাবে৷ মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, দয়া করে পুরনো জামাকাপড় দেবেন না৷ এখন আর কোনও মানুষ পুরনো জামা কাপড় পড়তে চায় না৷ যা পারবেন দিন— ত্রিপল, বইখাতা, চিঁড়ে, গুড়, মুড়ি, চাল, ডাল, আলু৷ বহু ছেলেমেয়ের বইখাতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ তাঁদের জন্য বইও দিতে পারেন৷
মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার ১ হাজার কোটি টাকার সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল৷ রাজ্য সরকারও ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিল৷ কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ এতটাই বেশি যে, এতেও কুলোচ্ছে না৷ তাই ৬২৫০ কোটি টাকা ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ ৫ লক্ষ পরিবার, যাঁদের ঘর নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তাঁদের ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে৷ পরে আরও ৫ লক্ষ মানুষকে সাহায্য করা হবে৷ ২৮ হাজার টাকা পাওয়া যাবে ১০০ দিনের কাজের মধ্যে দিয়ে৷
এছাড়াও বাড়তি অনুদান হিসাবে ২০ লক্ষ কৃষকের জন্য ৩০০ কোটির ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ কৃষকরা মাথাপিছু এতে ১৫০০ টাকা করে পাবেন৷ পানের বরজের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷ এখনই পানের বরজের জন্য ১ লক্ষ লোককে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে৷ আরও ১৫ হাজার টাকা যাতে তাঁরা পায়, তার জন্য ১০০ দিনের কাজ পাকা করে দেওয়া হবে৷ অর্থাৎ সব মিলিয়ে পানের বরজের জন্য ২০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে৷
এদিকে, উম্পুনের প্রভাবে সেচ দফতরের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। সেগুলি মেরামতির জন্য ২০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে৷ গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারের জন্য ১০০ কোটি টাকা৷ স্কুল বিল্ডিং,পানীয় জল শৌচালয় ১০০ কোটি৷ পোল্ট্রি, গবাদি পশুর জন্য ১০০ কোটি রাখা হয়েছে৷ মৎস্য দফতরে ১০০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে৷ হর্টিকালচারের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে৷ তিনি জানান, জুন মাসে কৃষকবন্ধু স্কিমের জন্য ৮০০ কোটি টাকা ছাড়তে হবে৷ এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে৷ ৫০ লক্ষ উপভোক্তার জন্য ২০০০ টাকা করে দেওয়া হবে৷ আগামী ২ মাসের জন্য এই টাকা রিলিজ করা হল৷