ঝড়ে শহরে উপড়ে যাওয়া গাছগুলি নাগরিকদের হাতেই তুলে দেবে কলকাতা পুরসভা। কেউ চাইলে গাছের গুঁড়ি এবং ডালপালা রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যেতে পারবেন। কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের ডিজি দেবাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, যাঁর প্রয়োজন, তিনি গাছগুলি তুলে নিয়ে যেতে পারবেন। আয়লার সময়েও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
তবে কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের প্রস্তাব মেনে গাছগুলি জনগণকে দেওয়ার আগে তাতে কোনও মূল্যবান কাঠ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখবেন পুরসভার অফিসাররা। ডিজির যুক্তি, কলকাতা শহরে যে গাছ পড়েছে তার ৯৮ শতাংশ শুধু জ্বালানির কাজে লাগে। তার দাম এতটাই কম যে, বিক্রি করে যা পাওয়া যাবে, তার তুলনায় তুলে নিয়ে যাওয়ার খরচ অনেক বেশি। মাত্র দু’টি মেহগনি গাছ পড়েছে। যার কাঠ ভালো দামে বিক্রি হয়। সেই গাছ দু’টি পুরসভা টেন্ডার ডেকে বিক্রি করে দেবে।
কলকাতা এবং শহরতলি ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মফস্সল শহরে বন দপ্তরের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রিত হয় আর্বান ফরেস্ট্রি বিভাগের মাধ্যমে। শুধু আর্বান ফরেস্ট্রি এলাকাতেই প্রায় দশ হাজারের উপর গাছ পড়েছে। এর মধ্যে ইডেন গার্ডেন্স এবং সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক মিলিয়ে প্রায় দুশো গাছ পড়েছে। তবে তার সঠিক সংখ্যা কত, তা এখনও হিসেব করে উঠতে পারেনি বন দপ্তর। হাতেগোনা কয়েকটি বাদে বেশিরভাগ গাছই প্রতিস্থাপনযোগ্য নয়।
কলকাতার পুরসভার এলাকায় আনুমানিক ১৪ হাজার গাছ পড়েছে। সেগুলি কেটে আপাতত রাস্তার ধারে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। উদ্যান বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য দেবাশিস কুমার বলেন, ‘শহরের বহু জায়গায় আমরা গাছ কেটে গাড়ি যাওয়ার জায়গা করে দিয়েছি। কিন্তু কাঠের গুঁড়িগুলি রাস্তায় পড়ে থাকায় লোকের চোখে লাগছে। আমরা চাইছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গাছগুলি রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলতে।’
বন দপ্তরের আর্বান ফরেস্ট্রি বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী ঝড়ে উপড়ে যাওয়া গাছগুলি ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তাদের গাছের গুঁড়ি রাখার ডিপো আছে। সেখানে নিয়ে গিয়ে নিলামে তোলা হবে। বড় গুঁড়িগুলি তুলে বন দপ্তরের গুদামে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।