ভিনরাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফিরিয়ে আনা তাঁর কর্তব্য। তেমনই রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়তে না-দেওয়াও তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সরকারে থাকার ‘দায়বদ্ধতা’ থেকেই এই দুই দিক মাথায় রেখে তাঁকে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। এদিন নবান্নে এমনটাই মন্তব্য করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আক্ষেপ, রাজ্যবাসীর স্বার্থেই সাবধানে পা-ফেলা জরুরি বুঝেও বিরোধীরা লোক খেপাচ্ছে, টিটকিরি দিচ্ছে। বিরোধী সমালোচকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘উস্কানি, টিটকিরি না-দিয়ে সহযোগিতা করুন।’ পরিযায়ীদের ফেরাতে আরও ১২০টি ট্রেন আনার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যাঁরা এখনও ফেরার অপেক্ষায়, তাঁদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘একটু ধৈর্য ধরুন। আমরা সবাইকে ফিরিয়ে আনব।’
বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি থেকে একবারে বাংলার সমস্ত শ্রমিককে ফিরিয়ে আনার জন্য রাজ্যকে নানা ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এই দাবিতে সরব রাজ্যের বিরোধীরাও। তাই রাজ্যবাসীর সামগ্রিক মঙ্গল চিন্তা থেকেই ক্ষুব্ধ মমতার প্রশ্ন, ‘সব রাজ্যকে বলব, এক দিনে আমার ঘাড়ে ঠেলে দিলে, কী করে নেব? গ্রামেও তো রেজিস্ট্যান্স তৈরি হচ্ছে।’ কাতারে কাতারে মানুষকে ফিরিয়ে এনে, তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে বাড়ি ফেরানোর জন্য বিপুল আয়োজন করতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে।
ইতিমধ্যেই নানা রাজ্য থেকে আড়াই, তিন লক্ষ মানুষকে ট্রেনে-বাসে বাংলায় ফেরানো হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। ১৫টি ট্রেন ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে। আরও শ’খানেক ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর সঙ্গে আরও ১২০টি ট্রেনের ব্যবস্থা কয়েক দিনের মধ্যেই করে ফেলা হবে। সামগ্রিক হিসেব ধরলে দৈনিক গড়ে ১০টি ট্রেন করে রাজ্যে এসে পৌঁছবে। তাতে যে বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরবেন, তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা যে সহজ কাজ নয়, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।