করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় ২ মাস ধরে দেশে লকডাউন জারি। এমতাবস্থায় কেন্দ্রের কাছে আর্থিক প্যাকেটের আর্জি জানিয়েছে বাংলা-সহ বহু রাজ্যই। আর কিছু না হলে অন্তত পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার আর্জি নিয়ে বহুদিন ধরেই সরব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করা, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের প্যাকেজের ব্যাখ্যার শেষ দিনে রাজ্যকে আরও বেশি ঋণের সংস্থান করে দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তিনি এদিন বলেন, ‘এতদিন রাজ্যের জিডিপি-র ৩ শতাংশ ঋণ নিতে পারত রাজ্যগুলি। এবার সেই হার বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।’ আর অর্থমন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়েই এবার তীব্র তোপ দাগলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠককে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘চারদিন ধরে আপনারা অনেক রাজভোগ, রসগোল্লা, বিরিয়ানি দেখালেন। চারদিন চার রকম বক্তব্য পেশ করলেন। আমায় যদি জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে আমি বলব, না আছে রাজভোগ, না আছে রসগোল্লা, না আছে জিলিপি, আছে শুধু কাঁচকলা- এই আমার বক্তব্য।’
সাংবাদিক বৈঠকের পঞ্চম কিস্তিতে এসে অর্থমন্ত্রী সীতারমন জানিয়েছিলেন, ‘রাজ্যগুলির ঋণ নেওয়ার পরিমাণ ৩ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এতে অতিরিক্ত ৪.২৮ লাখ কোটি রাজ্যগুলি হাতে পাবে।’ তবে অতিরিক্ত অর্থের জোগানে রাজ্যগুলির উপর শর্তও চাপিয়েছে কেন্দ্র। আর এই নিয়েই ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘ওরা তো পেট্রলে কর চাপাতে বলেছিল। আমরা করিনি। অন্য রাজ্যের মতো কর্মীদের বেতন, ডিএ কাটা হয়নি। মানুষের বিপদ হবে, এমন কোনও সিদ্ধান্ত আমরা নিইনি।’
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশের কথা বলা হচ্ছে। আসলে হাতে আসবে ০.৫ শতাংশ। কারণ, এখানে অনেকগুলি শর্ত রয়েছে, যা মানলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আর থাকবে না।’ রাজ্যের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে তিনি যে ‘কেন্দ্রীয় টাকা’ চান না, তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘যতদিন থাকব। মানবিক মুখ নিয়েই রাজনীতি করব। মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে ক্ষমতা চাই না আমার।’ কেন্দ্রীয় প্যাকেজ যে আদতে ‘অশ্বডিম্ব’ তা নিয়ে ফের একবার সরব হন মুখ্যমন্ত্রী।