করোনা মোকাবিলার মধ্যেই ফের একবার রাজ্য-রাজ্যপাল সঙ্ঘাত চরমে উঠল। গতকাল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সঙ্গে সঙ্ঘাতে সুর চড়িয়ে তাঁর ‘সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার’ কথা মনে করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালের পাঠানো জোড়া চিঠির জবাবে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘জনগণ দ্বারা নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা যদি মেনে নিতে না পারেন, তাহলে আপনি মনোনীত পদের বদলে নির্বাচিত হয়ে আসুন।’ রাজ্যপালের এহেন কার্যকলাপ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, স্বাধীন দেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক ইতিহাসে কোনও মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে রাজ্যপালের এই রকম মনোভাবের নজির নেই। মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো এই চিঠি প্রকাশ্যে আসার পরই অবশ্য টুইট করে রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ‘এই চিঠি সারবত্তাহীন।’
করোনা মোকাবিলা নিয়ে রাজ্য সরকারের কাজকর্ম নিয়ে বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে প্রথম থেকেই ধারাবাহিকভাবে প্রশ্ন তুলছেন রাজ্যপাল। বিভিন্ন অভিযোগের উল্লেখ করে গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল তারিখ মুখ্যমন্ত্রীকে দু’টি চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যপাল। তার জবাবে এ দিন ১৩ পাতার দীর্ঘ চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি রাজ্যপাল হিসেবে ধনকরের ভূমিকায় তীব্র অসন্তোষ স্পষ্ট করেছেন তিনি। জোড়া চিঠিতে করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রীর কাজ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ‘গণতন্ত্রে সব ক্ষমতার উৎস জনগণ। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী-সহ জনপ্রতিনিধিরাই দায়িত্বপ্রাপ্ত।’ এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়ের উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়েছেন, সেই কর্তব্য পালনে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকার সঙ্গে রাজ্যপালের ভূমিকা মেলে না। সেই সূত্রেই মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের কোনও কাজে অসন্তুষ্ট হলে বা অভিযোগ থাকলে রাজ্যপাল নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। কিন্তু উনি যেভাবে বিজেপির সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজ্যের কাজের নিন্দা করছেন, তা খুবই দুঃখজনক।