করোনা আতঙ্কের জেরে পিছিয়ে গেল এনপিআর অর্থাৎ জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জির কাজ। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এনপিআর-এর কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা পুরো প্রক্রিয়া। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করার ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। এনপিআর-এর পাশাপাশি কাজ বন্ধ হচ্ছে জনগণনার প্রথম পর্যায়ও। আদমশুমারি এবং এনপিআর একসঙ্গে হওয়ার কথা ছিল। আপাতত কোনওটাই হচ্ছে না।
মঙ্গলবারই দেশজুড়ে ২১ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘করোনা থেকে বাঁচতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য অবশ্যই দেশকে আর্থিক মূল্য দিতে হবে। কিন্তু প্রত্যেক ভারতীয়র জীবন বাঁচানো এই সময় বেশি দরকার। আমি করজোড়ে প্রার্থনা করছি, এই সময় যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন। বিশেষজ্ঞদের মতে করোনা সংক্রমণ রোখার জন্য কমপক্ষে ২১ দিন দরকার। সেই জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার ফলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ত। তাই, খানিকটা বাধ্য হয়েই এই এনপিআর এবং জনগণনা বন্ধের সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের।
উল্লেখ্য দীর্ঘ বিতর্ক এবং বিরোধীদের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই এপ্রিল থেকে এনপিআর-এর কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়ছিল কেন্দ্র। একধিক রাজ্য সরকার এতে তীব্র আপত্তি জানায়। এমনকী, বিজেপির বন্ধু দলগুলিও এর বিরোধিতা করেছে। বিজেপি-জেডিইউ জোট শাসিত বিহারে নতুন এনপিআর বিরোধী প্রস্তাবও পাশ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্র বর্তমান সরকার যে ফরম্যাটে এনপিআর কার্যকর করতে চাইছে, তার প্রয়োজন নেই। কেন্দ্র সরকার প্রস্তাবিত এনপিআর নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছে ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টিও। অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভাতেও এর বিরুদ্ধে প্রস্তাবও আনা হয়েছে। প্রায় সমস্ত বিরোধী দল একযোগে এর বিরোধিতা করেছে। কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হয়নি কেন্দ্র। বাতিল হয়নি এনপিআর করার সিদ্ধান্ত। অবশেষে করোনার জেরে পিছিয়ে দিতে হল কেন্দ্রের মহাগুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনার কাজ।