করোনা আতঙ্কে গোটা বিশ্ব। ভারতেও আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। বাংলায় এখনও করোনা থাবা না বসালেও মানুষ ত্রস্ত। তাই নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। আজ থেকে বন্ধ সমস্ত স্কুল কলেজ। এবার পদক্ষেপ নেওয়া হল বেলুড় দক্ষিণেশ্বরেও।
আজ থেকে বেলুড় মঠে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরে বসে ধ্যান-সন্ধ্যারতি দেখা, প্রসাদ বিতরণ এবং প্রেসিডেন্ট মহারাজকে প্রণাম, দর্শন এবং মন্ত্রদীক্ষা প্রদান— অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখছেন মঠ কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে দক্ষিণেশ্বরে মন্দির দর্শনের সময় কমানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস সম্পর্কে দর্শনার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বেলুড় মঠ ও দক্ষিণেশ্বর মন্দির চত্বর-সহ সংলগ্ন এলাকায় ওই রোগ সম্পর্কে নানা বিধি-নিষেধের ব্যানার লাগানো হয়েছে। অডিয়ো ব্যবস্থার মাধ্যমেও তা ঘোষণা করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, শনি ও রবিবার বাদে সপ্তাহের অন্য দিনে বেলুড় মঠে প্রায় ১৫ হাজার দর্শনার্থী আসেন। ছুটির দিনে তা বেড়ে হয় প্রায় ২০ হাজার। রোজ দুপুরে মঠের ‘সারদা সদাব্রত’ ভবনে প্রসাদ পান পাঁচ-সাত হাজার লোক। প্রতি সন্ধ্যায় প্রায় ৮০০ দর্শনার্থী শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরে বসে আরতি দেখেন।
তাই এই মুহূর্তে ওই জায়গাগুলিতেই ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, মঠের স্বেচ্ছাসেবকেরা দর্শনার্থীদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে শ্রীরামকৃষ্ণের মন্দিরে নিয়ে যাবেন। প্রণাম সেরেই বেরিয়ে আসতে হবে। সেখানে বসে ধ্যান কিংবা সন্ধ্যারতি দেখা যাবে না। তার বদলে মঠ চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় বড় পর্দায় আরতি দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। সারদা সদাব্রত ভবনেও বন্ধ দুপুরের প্রসাদ বিতরণ। পরবর্তী নির্দেশিকা জারি না-হওয়া পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট মহারাজকে প্রণাম করতে যেতে পারবেন না ভক্তেরা। এ ছাড়াও পরবর্তী নির্দেশিকা জারি না হওয়া পর্যন্ত মন্ত্রদীক্ষা বন্ধ থাকবে এবং ওই সংক্রান্ত কোনও অনুসন্ধানের উত্তর পাওয়া যাবে ১৪ এপ্রিলের পরে।
অন্য দিকে, দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার লোকের ভিড় হয়। পুজো দেওয়ার জন্য রোজই মন্দির চত্বরে লম্বা লাইন পড়ে। এখন থেকে সেই লাইনে যাতে এক জনের থেকে অন্য জনের অন্তত এক হাত দূরত্ব থাকে, সে দিকে স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মীরা নজর রাখছেন বলে জানান মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী।
বেলুড় মঠ ও দক্ষিণেশ্বরে প্রতিদিন কয়েক হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীর সমাগম হয়। যে কোনও ছুটির দিন বা উৎসবে তা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। সে কারণেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছেন বেলুড় ও দক্ষিণেশ্বর কর্তৃপক্ষ। তবে গঙ্গার দু’পারের ওই দুই স্থান দর্শন পুরোপুরি বন্ধ থাকছে না।