পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির আগেই নির্বাচন কমিশনারকে সাত দফা নির্দেশ দিলেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকর।
বৃহস্পতিবার রাজভবনে বৈঠকে বসেন রাজ্যপাল এবং নির্বাচন কমিশনার। প্রায় কুড়ি মিনিটের বৈঠকে রাজ্যে নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে যাতে পুরভোট হয়, নির্বাচন কমিশনারকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন রাজ্যপাল।
জানা গিয়েছে, পুরভোটের প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্যপালই নির্বাচন কমিশনারকে তলব করেন রাজভবনে। এ দিনের বৈঠকে নির্বাচন কমিশন পুর ভোটের জন্য কী কী প্রস্তুতি নিয়েছে, তাও জেনে নেন রাজ্যপাল। যদিও বৃহস্পতিবারের বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি এদিন বলেন , ‘এখন উনি শিক্ষা থেকে অন্য সব বিষয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন। যারা এই ধরণের বিবৃতি দিচ্ছেন, তাঁদের ইতিহাস জানতে হবে।’ তবে নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া নির্দেশনামার প্রেক্ষিতে যা বলার কমিশনই বলবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
এপ্রিলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে পুরভোট। ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আগামী ৪ মার্চ রাজ্যের জেলাশাসকদের নিয়েও পুরভোটের প্রস্তুতি বৈঠক করতে চলেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তার আগেই কার্যত নজিরবিহীনভাবে বৃহস্পতিবার সকাল ১১.৩০ থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস ও সচিব নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্যের সঙ্গে প্রায় কুড়ি মিনিট বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, বৈঠকে পুর ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরপরই নির্বাচন কমিশনারকে সাত দফা প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন রাজ্যপাল।
জানা গেছে, এই বৈঠকে নির্বাচন কমিশনারকে রাজ্যপাল বলেনঃ১। সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের জন্য যাতে নির্বাচন কমিশনের দরজা খোলা থাকে। নির্বাচন যাতে শান্তিতে ও নির্বিঘ্নে হয় এবং ভোটাররা যাতে তাদের ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। ২। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসার কথা মাথায় রেখে এমন পদ্ধতি নিতে হবে যাতে পুর ভোটকে কেন্দ্র করে কোনও হিংসা বা হানাহানির ঘটনা না ঘটে। ৩। নির্বাচন কমিশনের তরফে নেওয়া যাবতীয় সিদ্ধান্ত যাতে রাজ্যপালকে অবগত করা হয়, তাও এ দিনের বৈঠকে কমিশনারকে বলেন রাজ্যপাল। ৪। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সব রাজনৈতিক দলকেই সমান সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনারকে এ দিনের বৈঠকে এটাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়। ৫। এ দিনের বৈঠকে নির্বাচন কমিশনারকে রাজ্যপাল মনে করিয়ে দেন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের মতোই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই ক্ষমতার বলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে কোনও একটি রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। সেটা মনে রাখতে হবে। ৬। নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করার জন্য যদি কোনও সরকারি আধিকারিককে বদলি করতে হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের মত সেই ভূমিকা নিতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও। ৭। এ দিনের বৈঠকে নির্বাচন কমিশনারকে রাজ্যপাল আরও বলেন, পুরভোট নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করুন। কিন্তু বিরোধীদের মতামতকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
যদিও বৈঠক শেষে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে চাননি নির্বাচন কমিশনার।