ইতিমধ্যেই একাধিক রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, অদূর ভবিষ্যতে কলকাতায় পানীয় জলের সঙ্কট হবে। দেখা গেছে, প্রতিদিন মাথাপিছু জল খরচের হিসেবে দেশের মধ্যে কলকাতার স্থান প্রথম সারিতেই। অথচ এত দিন জলসঙ্কট আটকানোর জন্য সামগ্রিক কোনও নীতি ছিল না। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকা মেনে ভূগর্ভস্থ জল তোলার ক্ষেত্রে একটি নীতি নির্ধারণ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।
প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, ক্রমাগত জল তোলার জন্য শহরের কোন এলাকায় জলস্তর কত নেমেছে, তার ভিত্তিতে একটি রংভিত্তিক অর্থাৎ ‘কালার কোডেড জোনাল ম্যাপ’ তৈরি করা হবে। লাল, কমলা ও সবুজ— এই তিনটি রঙের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকায় জলস্তরের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে। ক্রমাগত জল তোলার ফলে যে সব জায়গায় জলস্তর বিপজ্জনক ভাবে নেমে গিয়েছে, সেই এলাকা চিহ্নিত করা হবে লাল রঙে। কমলা রং বোঝাবে, সংশ্লিষ্ট এলাকায় জলস্তর দ্রুত নামতে শুরু করেছে, যা ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। আর সবুজ রং দেখে বোঝা যাবে, ওই এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর ঠিকই রয়েছে।
পুরসভার প্রস্তাবিত ওই নীতি অনুযায়ী, শুধুমাত্র সবুজ রঙে চিহ্নিত এলাকা থেকেই ভূগর্ভস্থ জল তোলার অনুমতি দেওয়া হবে। এক পদস্থ পুরকর্তার কথায়, ‘অনুমতি দেওয়া মানে এই নয় যে ইচ্ছেমতো জল তোলা যাবে। সব দিক বিবেচনা করে এবং পরিবেশনীতি মেনেই সীমিত ক্ষেত্রে ওই অনুমতি দেওয়া হবে।’
ওই ম্যাপ তৈরির জন্য ‘স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টরেট’-এর কাছ থেকে শহরের জলস্তর সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তবে ম্যাপ তৈরির পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়া ঠেকাতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। এই বিষয়েই এক পুরকর্তা জানিয়েছেন, ‘এলাকাভিত্তিক জলস্তর চিহ্নিত করা ও ভূগর্ভস্থ জলস্তরের ‘রিচার্জ’, দু’টি বিষয়ই পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত। তাই দু’টি কাজই একসঙ্গে করা হবে।’