শনিবার সকালে প্রয়াত হয়েছেন শিক্ষাবিদ তথা তিনবারের তৃণমূল সাংসদ কৃষ্ণা বসু। তাঁর মৃত্যুতে রাজ্য–রাজনীতিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কারণ শুধু শিক্ষাবিদ বা সাংসদ নন, কৃষ্ণা বসু ছিলেন নেতাজির ভাইপো স্বাধীনতা সংগ্রামী শিশিরকুমার বসুর স্ত্রীও। আর এহেন একজন ব্যক্তিত্বের প্রয়াণে শোকবার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই টুইটে মমতা লেখেন, ‘এমন একজনকে হারালাম যাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, ভালবাসতাম। স্বাধীনতা সংগ্রামী শিশির বসুর স্ত্রী এবং প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কৃষ্ণা বসুর আকস্মিক মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। নেতাজির পরিবারের সদস্য ছাড়াও তিনি ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক, বিখ্যাত কবি এবং সাহসি শিক্ষাবিদ। সুমন্ত্র, সুগত এবং শর্মিলা ছাড়াও তিনি পুরো তৃণমূল পরিবারের মায়ের মতো ছিলেন। ভারতীয় সমাজ এবং বাংলার সংস্কৃতিতে তাঁর অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
এছাড়া নবান্ন থেকে প্রকাশিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোকবার্তায় বলা হয়েছে, ‘বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গ্রন্থকার, সমাজকর্মী ও প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা বসুর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মেজদাদা শরৎ কুমার বসুর পুত্র ডাঃ শিশির কুমার বসু, যিনি নেতাজিকে কলকাতার এলগিন রোডের বাড়ি থেকে গৃহবন্দী অবস্থায় ব্রিটিশ শাসকের চোখে ধুলো দিয়ে তাঁর মহানিষ্ক্রমণে সক্রিয় সহায়তা করেছিলেন তাঁর সহধর্মিণী ছিলেন কৃষ্ণা বসু।
কৃষ্ণা বসু সিটি কলেজের অধ্যক্ষা ছিলেন। ১৯৯৬, ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে মোট তিন বার তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। সাংসদ থাকাকালীন তিনি পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এক্সটার্নাল আফেয়ার্স–এর চেয়ারপার্সন–এর পাশাপাশি কমিটি অন অফিশিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ ও কেন্দ্রীয় সরকার–এর বিভিন্ন কমিটির সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নেতাজি রিসার্চ ব্যুরোর প্রধান হিসেবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আদর্শ ও দেশপ্রেমের ভাবনাকে তিনি প্রসারিত করে গেছেন।
কৃষ্ণা বসু ‘অ্যান আউটসাইডার ইন পলিটিক্স’, ‘এমিলি অ্যান্ড সুভাষ’, ‘লস্ট অ্যাড্রেসেস’, ‘চরণরেখা তব’, ‘প্রসঙ্গ সুভাষচন্দ্র’, ‘ইতিহাসের সন্ধানে’ ইত্যাদি বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর প্রয়াণে রাজনীতি ও শিক্ষা জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি প্রয়াত কৃষ্ণা বসুর দুই পুত্র সুমন্ত্র ও সুগত, কন্যা শর্মিলা সহ তাঁর সকল আত্মীয় পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’