জীবনে ভারসাম্য প্রয়োজন। প্রতি মুহুর্তে বড়রা আমাদের বলে থাকেন এই একটাই কথা, কিন্তু মানেন কি কেউ? মানে এই সমাজ? আদৈ ভাবে? প্রশ্ন হাজার টা, উত্তর একটাই। ভাবে না। এই সমাজের ঘেরাটোপে, সমাজের হাজার এক নিয়মে ‘ওদের’ জন্য ভাবার সময় থাকে না কারোর। ওরা কারা? আসছি একে একে।
ধর্মকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে মুর্তির মাথায় দুধ ঢালা হয়। এতে সারা দেশ জুড়ে নষ্ট হয় গ্যালন গ্যালন দুধ। এদিকে পথশিশুদের মুখে একটু দুধ দেওয়ার কেউ নেই। যদি ব্যাপারটাকে সেভাবেই দেখি তালে এখানে ভারসাম্য কোথায়? কিন্তু এবার এই ভারসাম্য বজার রাখার কাজ করছে আসানসোল ব্রাদারহুড। শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে ‘শিবজ্ঞানে জীবসেবা’ করছেন তারা। এ এক মহান উদ্যোগ।
একদিকে যখন ভক্তরা শিবের মাথায় দুধ ঢালবেন অন্যদিকে একদল যুবক-যুবতী মন্দির চত্বরে দুধ-পাউরুটি-বিস্কুট খাওয়াবেন দুঃস্থ শিশুদের। সংস্থার সদস্যদের মতে, দুধের অভাবে অপুষ্টিতে ভুগছেন শহরের দুঃস্থ ও পথশিশুরা। ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিচ্ছে ওইসব শিশুদের শরীরে। তাই দুধ অপচয় না করে শিশুদের খাওয়ানোর বার্তা দিতেই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে এই নতুন বার্তা তুলে ধরা হচ্ছে। মন্দিরে মন্দিরে এই কর্মসূচি পালন হোক এই আহ্বান জানাচ্ছে আসানসোল ব্রাদারহুড।
ব্রাদারহুডের সম্পাদক পারমিতা মজুমদার বলেন, ‘রামকৃষ্ণদেব, স্বামী বিবেকানন্দরা জীবে প্রেমের মাধ্যমেই ঈশ্বর সেবার কথা বলে গিয়েছেন। শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণদেব শিবজ্ঞানে জীবসেবার কথা বলে গিয়েছেন। সেই সেই পথকেই আমরা অনুসরণ করছি। তাই মন্দিরে দুধ না ঢেলে অপুষ্টির শিকার শিশুদের মুখে দুধ ও খাবার তুলে দেব।’ সভাপতি প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের এই কর্মসূচি দেখে যাঁরা মন্দিরে যাবেন তাঁরাও দুধের অপচয়ের বাস্তবতা বুঝতে পারবেন সেই আশা রাখি’। তাই শুধু আসানসোল নয়, আমরাও একটু বিপদে ঠাকুরকে না ডেকে, কুসংস্কারে মন না দিয়ে এবার মানুষের মধ্যে দেবতা খুঁজি!