সকাল থেকেই টলিপাড়ায় শোকের ছায়া। আজ ভোররাতে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন অভিনেতা তাপস পাল। আচমকা এমন এক খবরে বিস্মিত সকলেই। মানতে পারছেন না কেউই ‘তাপস দা’ আর নেই। এই মৃত্যুসংবাদ মানতে পারছেন না অভিনেতা সাংসদ দেবও। তিনি জানালেন, “ভালো মানুষেরাই তাড়াতাড়ি চলে যায়”।
দেব জানিয়েছেন, “সকালবেলা এরকম একটা খবর পাব, একেবারেই আশা করিনি। টালিগঞ্জ পাড়া থেকে লোকসভা, সব জায়গাতেই এই মানুষটার সাহচর্য পেয়েছি। ‘চ্যালেঞ্জ-২’ ‘আই লাভ ইউ’, ‘সেদিন দেখা হয়েছিল’ ছবিতে ওঁর সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছিল। আমাদের প্রজন্মের কাছে তাপস পাল এমনই একজন অভিনেতা, যিনি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ছবিতেও কাজ করেছেন, আবার একেবারে মূল ধারার কমার্শিয়াল ছবিতেও দাপিয়ে অভিনয় করেছেন। আমাদের প্রজন্ম অভিনেতা বলতে তাপস পালের অভিনয় দেখেই বড় হয়েছে।
এই অভিনয় জগতের বাইরেও ওঁকে দেখেছি, এক জন অসম্ভব ভাল মানুষ হিসেবে। প্রচুর মানুষের জন্য কাজ করেছেন। অনেক মানুষকেই ঢাক না পিটিয়েই সাহায্য করতে দেখেছি ওঁকে”।
সহকর্মীর মৃত্যু মানতে পারছেন না অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অভিনেতা তাপস পালের ‘দুরন্ত প্রেম’-এর নায়িকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘‘এর থেকে খারাপ খবর আর কিছু হতে পারে না। সেই ’৯৪ সাল থেকে যোগাযোগ। আমার প্রথম ছবির হিরো। সেখান থেকে শুরু। আমি এখনও ভাবতে পারছি না..’’ কান্নায় কথা আটকে গেল রচনার।
রচনা আরও জানালেন, “‘কখনো বুঝতে দেননি একজন অতো বড় মাপের অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করছি। সম্পর্ককে সহজ করে নিতেন বলে অভিনয়টাও অনায়সে বেরিয়ে আসত।’’ স্মৃতি থেকে বললেন রচনা। তাঁর মনে হয়, ‘‘উত্তমকুমারের পর বাংলা ছবিতে অন্যতম সেরা অভিনেতা তাপসদা। প্রসেনজিৎ নিজেই বলে তাপস পাল অনবদ্য অভিনেতা।’’
তাপস পালের অভিনয় সত্তার নানা দিকের কথা প্রকাশ করে রচনা বললেন,‘‘বাংলায় এমন কোনও নায়িকা নেই যাঁর সঙ্গে তাপসদা অভিনয় করেননি। ভুল জীবনে প্রত্যেক মানুষ করে। এ নিয়ে কথা বলতে চাই না। তবে মানুষ তাপস পাল এক কথায় অসাধারণ। সাম্প্রতিক অতীতে তো আর ওর সঙ্গে ফ্লোরে দেখা হতো না। তবুও খুব ভাল যোগাযোগ ছিল। কাজের বাইরে সম্পর্ক তৈরি করা, সঙ্গে থাকার মানুষ ছিলেন তাপসদা। খুব কষ্ট হচ্ছে একে একে কাছের মানুষ সবাই চলে যাচ্ছে’’ গলা ধরে এল রচনার।