বিগত কয়েক বছরে বারবারই নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। এবার মোদীর আমলে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টার (ইজেডসিসি)-এ বড়সড় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠল। ২০১৪ থেকে ২০১৭, এই তিন আর্থিক বছরে কয়েক কোটি টাকার আর্থিক গরমিল ধরা পড়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। সল্টলেকের জিডি আইল্যান্ডের কাছে অবস্থিত এই বিখ্যাত সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে ঘিরে কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ স্বীকারও করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক।
মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ওই তিন অর্থবর্ষে কলকাতায় অবস্থিত ইজেডসিসি’র একাধিক পরিকাঠামো ও আনুষঙ্গিক উন্নয়নে কয়েক কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার সঠিক ব্যবহার করা হয়নি। কোটি কোটি টাকা এদিক-ওদিক করা হয়েছিল। অভ্যন্তরীণ অডিটে এ সংক্রান্ত অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। মন্ত্রকের তরফে কলকাতার এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ঘুঘুর বাসা ভাঙতে উচ্চপর্যায়ের তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে বলেও জানান দিল্লীর ওই কর্তা।
এ প্রসঙ্গে ইজেডসিসি কলকাতার অধিকর্তা গৌরী বসু বলেন, ওই তিন অর্থবর্ষে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ কানে এসেছিল। কিন্তু ওই সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না। তাই এ নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। গৌরীদেবীর দাবি, তিনি ২০১৮ সাল থেকে সংস্থার শীর্ষ পদে রয়েছেন। ওই সময়ে অধিকর্তা পদে ছিলেন ও পি ভারতী।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক যোগ রয়েছে বলেই মনে করছে তৃণমূল। কেননা, নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পর থেকেই প্রথম তিন বছর এই আর্থিক অনিয়ম হয়েছিল। এই সময়কালে বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত, বর্তমান বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা সহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রী ইজেডসিসি’তে রাজনৈতিক কর্মসূচীতে এসেছিলেন।
গেরুয়া শিবিরের বরাবরের অভিযোগ, কলকাতায় রাজ্য সরকারের অধীনস্ত কোনও হল কিংবা প্রেক্ষাগৃহ বিজেপিকে দেওয়া হয় না। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থা ইজেডসিসি’তেই তাঁরা সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করতে বাধ্য হয়েছে। এক্ষেত্রে ওই সময়ের কোটি কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে এই রাজনৈতিক প্রেক্ষিতের যোগসূত্র দেখছে রাজ্যের শাসক দল।