সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে প্রায় দু’মাস ধরে রাত জাগছে দিল্লীর শাহিনবাগ। কলকাতার পার্কসার্কাসেও চলছে অবস্থান। শুধু তাই নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই এখনও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে চলছে অনবরত বিক্ষোভ। বিরোধীরা বলছেন বিতর্কিত এই আইনটি প্রয়োগ করলে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হবে। এই পরিস্থিতিতে এবার সিএএ নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপির জোটসঙ্গী ও শিরোমণি অকালি দলের নেতা প্রকাশ সিং বাদল। মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে তিনি বলেন, একটি সরকারের কখনও ধর্মের ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ করা উচিত নয়। পাশাপাশি সব ধর্মের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান ওই প্রবীণ নেতা।
অমৃতসরে এক সভা থেকে বাদল বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ভাল নয়, এটা যথেষ্টই উদ্বেগের কারণ। সব ধর্মকেই সম্মান করতে হবে। যদি কোনও সরকার সফল হতে চায় তবে অবশ্যই সংখ্যালঘুদের সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে। হিন্দু, মুসলমান, শিখ এবং খ্রিস্টান, সবাই একই পরিবারের অংশ, সবার উচিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দেশে যে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা আটকানো।’ মোদী সরকারকে তিনি এ কথাও স্মরণ করিয়ে দেন যে, ‘আমাদের সংবিধানে লেখা আছে যে আমাদের দেশে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শাসন থাকবে। ধর্মনিরপেক্ষতার পবিত্র নীতি থেকে সরলে তা আমাদের দেশকেই দুর্বল করে দেবে। তাই ক্ষমতাসীন দলকে অবশ্যই ভারতকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে, ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র রক্ষায় কাজ করতে হবে।’
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারকে শিখ গুরুদের থেকে শিক্ষা নিতে হবে, যাঁরা ভ্রাতৃত্ব এবং সমাজতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন। শিখ শাসক মহারাজা রঞ্জিত সিংয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তিনি একজন মুসলিম বিদেশমন্ত্রীকে নিয়োগ করেছিলেন। তিনি ভোটের বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন না। তিনি আমাদের দেশের সংবিধানের উল্লেখ করা ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটির প্রকৃত অর্থ বুঝতে পেরেছিলেন।’ স্বাভাবিকভাবেই শরিক দলের নেতার এ হেন বক্তব্যে নতুন করে ফের অস্বস্তি বেড়েছে মোদী সরকারের।