এ যেন উলট পুরাণ! এতদিন নরেন্দ্র মোদী মানেই বিজেপির কাছে ছিল মানুষের মন জয় করার ম্যাজিক। আর অমিত শাহ মানেই ‘চাণক্য’র মতো কূটনৈতিক চাল দিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করা। কিন্তু দিল্লীর ভোটে ভরাডুবির পর সেই ‘মিথ’ও এবার ভাঙল।
প্রসঙ্গত, ফল প্রকাশের পরের দিনও দিল্লী ভোট নিয়ে নীরবই ছিলেন মোদী। গতকাল সন্ধেয় এক অনুষ্ঠানে তিনি ফিরিস্তি দিলেন গত আট মাসের কাজের। বললেন, দুনিয়ার সব থেকে যুব দেশে ‘টোয়েন্টি-টোয়েন্টি’ ম্যাচের গতিতে খেলছে সরকার। ৩৭০ থেকে রামমন্দির, এমনকি নাগরিকত্ব আইনের কাজও শেষ। তবে এ সব স্রেফ ‘নমুনা’। আসল কাজ শুরু এখান থেকেই। এমন অনেক ফয়সালা হবে, সেঞ্চুরি নয়, ডবল সেঞ্চুরি হবে। তবে বুধবার আর তার পাশে দেখা মিলল না শাহর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও এলেন না তিনি।
২০১৪-র লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে আশির মধ্যে সত্তরের বেশি আসন পাইয়ে দিয়ে মোদীর থেকে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ শিরোপা পেয়েছিলেন শাহ। তার পর থেকেই তাঁকে বিজেপির ‘চাণক্য’ বলা হয়। দিল্লী বিপর্যয়ের পর দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, শাহ কি এ বার ‘চাণক্য’ তকমা খোয়াবেন? এক নেতার দাবি, ‘শুধু মেরুকরণে ভর করে প্রচার করা তো শাহের ভুল কৌশল ছিলই। তার উপর বুথ-ফেরত সব সমীক্ষা যখন আপ ঝড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিল, তখনও সংশয়ে ছিলেন শাহ। প্রকাশ্যে আসেননি। ঘনিষ্ঠদেরও নিশ্চিত করে বলতে পারেননি দল কত আসন পেতে চলেছে।’
আসলে গত একমাসে দিল্লীতে বিজেপির প্রচারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন শাহ। মোদীর পাশাপাশি প্রচারের ময়দানে অল্প দিনে ৩৫ টি জনসভা করে দিল্লী কার্যত চষে ফেলেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়। ভোট প্রচারে নামিয়েছিলেন ২৪০ সাংসদ, কেন্দ্রের ৭০ জন মন্ত্রী, বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের। তাই প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক।
এর মধ্যে ভেসে আসছে অন্তর্ঘাতের তত্ত্বও। পাঁচ বছর আগে এই দিল্লীতেই সঙ্ঘ ও বিজেপি কর্মীরা কাজ করেননি। এ বারেও কি তাই হল? যদিও গতকাল নির্মলা সীতারমণ বলেন, ‘আমরা হারিনি। আপের পক্ষে জমি আগে থেকেই তৈরি ছিল।’ কিন্তু দলে প্রশ্ন, এটা আগাম জানা সত্ত্বেও শাহের কৌশল কেন কাজে এল না?