২৫ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এশিয়ান সিলেক্ট (নেটপ্যাক) বিভাগে দেখান হয়েছিল পরিচালকদ্বয় সুদেষ্ণা গুহ এবং অভিজিৎ রায়ের ছবি ‘শ্রাবণের ধারা’। যা সেইসময়েই সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়ে নিয়েছিল। আজ নন্দনে ছিল সেই সিনেমারই প্রিমিয়ার।
যেখানে পরিচালকদ্বয় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিনেমার দুই অভিনেত্রী গার্গী রায়চৌধুরী ও বাসবদত্তা চট্টোপাধ্যায়। তবে উপস্থিত ছিলেন না সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, কাহিনীকার ডাক্তার শুভেন্দু সেন, চিত্রনাট্যকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত, সঙ্গীত পরিচালক আশু-অভিষেক। এই সিনেমায় গান লিখেছেন দূর্বা সেন। তিনিও উপস্থিত ছিলেন আজ। এছাড়াও টলিজগতের আরও অনেক রথী-মহারথীরা।
সিনেমার দুই প্রধান চরিত্র অমিতাভ সরকার ও নীলাভ রায়। একজন জীবনের অর্ধেকের বেশিটা পথই পেরিয়ে এসেছেন। আর অন্যজন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন নিজের লক্ষ্যের দিকে। বয়সে প্রবীণ অমিতাভ অ্যালজাইমার্স-এ আক্রান্ত হয়ে বর্তমান ভুলে গিয়েছে।
তাঁর কাছে তাই ‘ঝাপসা’ অতীতটাই বেশি স্পষ্ট। আবার পেশায় ডাক্তার নীলাভ নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে অস্বীকার করতে চান অতীতকে। জীবন থেকে অতীতকে পুরোপুরি মুছে ফেলে বাস্তব আর ভবিষ্যৎ নিয়ে এগোতে চান তিনি। মূলত এই দুটি চরিত্র এবং তাঁদের অতীতের ওপর ভর করেই এগোতে থাকে অভিজিৎ-সুদেষ্ণার ছবি।
এদিন ছবির প্রিমিয়ারে রীতিমত উচ্ছ্বসিত দেখা গেল দুই পরিচালককে। অভিজিৎ গুহ বলছিলেন, ‘এর আগে চলচ্চিত্র উৎসবে সবাই প্রশংসা করেছিল সিনেমার। আজ থেকে সাধারণ দর্শকদের নাগালে চলে এল আমাদের কাজ।
আশা করি সবাই দেখবেন এবং নিজেদের মতামত জানাবেন।’ একই কথা শোনা গেল আরেক পরিচালক সুদেষ্ণা রায়ের গলাতেও। তিনিও বলছিলেন, ‘বাংলা সিনেমায় সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে এরকম কাজ আগে হয়নি কখনো।’
এদিকে যেই দর্শকরা আজ দেখলেন সিনেমা, তাঁদের গলাতেও ফুটে উঠল একইরকম প্রশস্তিবাক্য। সিনেমা দেখতে আসা এক দর্শক বলছিলেন, ‘শ্রাবণের ধারা নিঃসন্দেহে এক ভাল ছবি। শ্রাবণের ধারার মতো যে সুর সুখের পরে, দুখের পরে ঝরে পড়ে, সেই সুরই যেন বাজতে থাকে এই ছবির প্রতিটি চরিত্রের মধ্যে।’
সিনেমা শুরুর আগে সন্ধ্যের দিকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি পড়ছিল। তা দেখে এক দর্শকের প্রতিক্রিয়া, ‘বসন্তে এভাবে অকাল শ্রাবণ নেমে এসেছে কলকাতায়। সত্যিই সিনেমার নাম আজ সার্থক।’