ফের চলচ্চিত্র জগতে নক্ষত্রপতন। প্রয়াত ‘কুইন অফ ক্যাবারে’ আরতি দাস। যিনি একডাকে সবার কাছে ‘মিস শেফালি’ বলেই পরিচিত। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা নাগাদ সোদপুরে নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাতের দশকের ‘রাতপরী’ তথা অভিনেত্রী আরতি দাস।
ভাগ্নি আলভিনা সাহা জানিয়েছেন, আজ সকাল ৬টা নাগাদ সোদপুরের বাড়িতেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ভুগছিলেন কিডনির সমস্যাতেও। আলভিনাই জানান যে, মিস শেফালির দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন এর আগে হাসপাতালেও ভরতি ছিলেন তিনি। ৭৬ বছর বয়সে জীবনাবসান ঘটল বাংলা চলচ্চিত্র জগতের ছয়ের দশকের মঞ্চ মাতানো ‘রাতপরী’র। যাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে।
প্রথম বাঙালি ক্যাবারে ড্যান্সার হিসেবে তাঁকে চিনেছিল বাঙালি। তাঁর আসল নাম আরতি দাস। কিন্তু মিস শেফালি নামেই ঝড় তুলেছিলেন তিনি। সাতের দশকের ‘রাতপরী’ও বলা হতো তাঁকে। সত্যজিৎ রায়ের ‘প্রতিদ্বন্দী’ এবং ‘সীমাবদ্ধ’ ছবিতে বিশেষ ভূমিকায় অভিনয়ও করেছিলেন তিনি।
একটা বয়সের পর কালের নিয়ম মেনেই প্রচারের আলো সরে গেছিল। শোনা যায়, দীর্ঘদিন ধরে কাজ না পেয়ে হতাশায় ভুগতেন তিনি। অভিমান ছিল, শিল্পী হিসেবে তেমন মর্যাদা পাননি বলেও। বেশ কয়েক বছর পর্দার আড়ালেই ছিলেন তিনি। শেষ জীবনে সঙ্গী হয়েছিল অসুখবিসুখ, অর্থকষ্ট। যদিও অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত একাধিকবার সাহায্যের হাত বাড়িতে দিয়েছেন তাঁর দিকে।
কলকাতার খ্যাতনামা সেই ক্যাবারে নর্তকী কোথাও গিয়ে কালের নিয়মে স্মৃতির ভারে মলিন হয়ে গিয়েছিল। ‘কুইন অফ ক্যাবারে’ ঠিক এই নামেই ডাকা হত তাঁকে।যাঁর নাচের মুগ্ধ ছিলেন উত্তম কুমার থেকে অমিতাভ বচ্চনের মতো অনেকেই। সেই মিস শেফালির বায়োপিক তৈরির কথাই গত বছর ঘোষণা করেছিলেন পরিচালক অপর্ণা-তনয়া কঙ্কনা সেন শর্মা। আরতি দাস ওরফে মিস শেফালির জীবনকাহিনির পাশাপাশি সেই ওয়েব সিরিজে কলকাতার ছয়ের দশকের চালচিত্রও ফুটে উঠত। কিন্তু নিজের জীবনকাহিনি অবলম্বনে সেই কাজ চাক্ষুষ করতে পারলেন না রাতপরী।